সোনাঝুরির হাটে ভ্রাম্যমাণ বাসটি। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
সোনাঝুরি হাটে পর্যটকদের সুবিধার জন্য নানা পরিষেবা সহ তৈরি হওয়া ভ্রাম্যমাণ বাসের অবশেষে উদ্বোধন হল শুক্রবার। জেলা প্রশাসনের তরফে এ দিন সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ বাসটির উদ্বোধন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলাশাসক বিধান রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কৌশিক সিংহ সহ অনেকে।
শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সমস্যার কথা মাথায় রেখেই এমন ভাবনা বেশ কয়েক মাস আগে নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। চলতি বছরের শুরুর দিকে বীরভূম সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাতে বাসটির উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তাঁর সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায় ওই বাসের উদ্বোধন কিছুতেই হচ্ছিল না। মাসের পর মাস পড়ে থেকে বাসটির রক্ষণাবেক্ষণও ঠিকমতো হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। শেষমেষ পুজো পেরিয়ে সেই বাসের উদ্বোধন হল।
সোনাঝুরির হাটে বছরভর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু, হাটে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও শৌচাগার না থাকায় প্রায়শই পর্যটকদের (বিশেষ করে মহিলা ও বয়স্ক) সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন বোলপুরের বাসিন্দা, একটি বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার দীপ্তেন্দু রায়। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এবং জাতীয় সড়কে সফরকালীন শৌচাগার নিয়ে বিশেষ করে মহিলাদের যে-সব সমস্যায় পড়তে হয়, তা নিয়ে দীপ্তেন্দু কাজ করেন। ওই সংস্থাটি গত বছর সোনাঝুরি হাটেও সমীক্ষা চালিয়ে দেখে, শৌচালয় এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকদের দুর্ভোগ হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের কাছে ওই সংস্থার তরফে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে পুরনো একটি বাসের ভোল বদলে তাতে পানীয় জল, শৌচাগার-সহ নানা সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন ওই সংস্থাকে তা রূপায়ণের ভার দেয়। সূত্রের খবর, আনুমানিক ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাসটিকে পর্যটকদের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়। বাসের ভিতরে শিশুকে স্তন্যপানের কক্ষ, আধুনিক শৌচাগার, একটি রেস্তোরা, পোশাক পরিবর্তনের কক্ষ এবং জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জন্যও শৌচালয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
সেই বাসের উদ্বোধন হওয়ায় খুশি সোনাঝুরি হাট কমিটি থেকে শুরু করে হাটের শিল্পী ও পর্যটকেরা। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “খোয়াই হাটের প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটকদের কাছে অন্যতম সেরা গন্তব্য। কিন্তু, বহু পর্যটককে বিশেষ করে মহিলাদের নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। সে কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনা এবং নির্দেশে আমাদের এই উদ্যোগ।’’ দীপ্তেন্দু বলেন, “ অবশেষে ভ্রাম্যমাণ বাসটির উদ্বোধন হওয়ায় সত্যিই আমরাও খুব খুশি। এতে পর্যটকেরা যেমন উপকৃত হবে, তেমনই স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে আগামী দিনে।”