মুম্বইয়ে মৃত পরিযায়ী শ্রমিক উত্তম মালের শোকার্ত পরিজন। —নিজস্ব চিত্র।
ফের বীরভূমের এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল মুম্বইয়ে। এ বারও ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ গিয়েছে তাঁর। কয়েকদিন আগেই বীরভূমের এক পরিযায়ী শ্রমিক নির্মাণকাজ করতে গিয়ে বহুতল থেকে পড়ে মারা যান। ওড়িশাতে সেপটিক ট্যাঙ্কে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মুরারইয়ের বাসিন্দা উত্তম মাল (৪৩) দিন দশেক আগে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে মুম্বই গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার পাঁচতলা বাড়ির ছাদে অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। পরিজনেরা জানান, রাতে অসাবধানতাবশত তিনি ছাদ থেকে পড়ে যান বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ দেহ স্থানীয় হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এ দিন সকালে ঘটনার খবর পৌঁছয় মুরারই থানার রাজগ্রামে। খবর পৌঁছতেই স্থানীয়রা উত্তমের বাড়িতে যান। প্রতিবেশীদের একাংশ জানান, উত্তম ছিলেন বাড়ির একমাত্র রোজগারে। তাঁর দুই ছেলে, স্ত্রী ও বয়স্ক মা রয়েছেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী ও মা কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারাচ্ছেন।
পরিবারকে স্বচ্ছল রাখার জন্য উত্তম মুম্বই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান পরিজনেরা। এলাকায় প্রত্যেক দিন কাজ পাওয়া যায় না বলে দাবি স্থানীয়দের। তাঁদের দাবি, পাথর শিল্পাঞ্চলে সে ভাবে কাজ নেই। বাধ্য হয়ে মুম্বই যান উত্তম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের পাশে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়। এ দিন উত্তমের বাড়ি যান যুগ্ম বিডিও (মুরারই ১) জাগ্রত চৌধুরী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিপ্লব শর্মা, জেলা পরিষদের সদস্য সিরাজুল খান ছাড়াও অনেকে।
মৃতের স্ত্রী তাপসী মাল বলেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যুর পরে সংসার চালাব কেমন করে? দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে শারীরিক ভাবে অক্ষম। রাতে কেমন ভাবে নীচে পড়ে গেল তাও অজানা আমাদের। এলাকায় কাজের সুযোগ থাকলে এ ভাবে স্বামীর মৃত্যু হত না। বেশি টাকা রোজগারের জন্য প্রাণ চলে গেল স্বামীর।’’
মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিপ্লব শর্মা বলেন, ‘‘পরিবারের পাশে থাকার জন্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সরকারি সাহায্য উত্তমের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দেহ বাড়িতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’