কয়েক বছর আগে জমজমাট পৌষমেলার মাঠ। — আনন্দবাজার আর্কাইভ।
এক মাস পরেই ঐতিহ্যবাহী পৌষ উৎসব। কিন্তু, বিশ্বভারতী এ বছর পৌষমেলা করবে কি না, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। যার ফলে এ বছর আদৌ মেলা হবে কি না, তা নিয়ে দোটানায় পড়েছেন বোলপুর-শান্তিনিকেতনের ব্যবসায়ীরা।
বিশ্বভারতী এ বার মেলা করবে কি না, মেলা হলে তা কোন মাঠে হবে, পুরনো মেলার মাঠে হলে সেখানে কবে ও কী ভাবে তাঁরা স্টল বুকিং করবেন, এমন নানা প্রশ্ন এখানকার ব্যবসায়ীদের ভাবিয়ে তুলছে। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদকালে ২০২০ সালে অতিমারির যুক্তি দেখিয়ে এবং তার পরের দুই বছর পরিবেশ দূষণ-সহ নানা অসুবিধার কারণ দেখিয়ে পৌষমেলার আয়োজন করেনি বিশ্বভারতী।
পরপর দু’বার বিশ্বভারতী পৌষমেলার আয়োজন না করায় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় বহু ব্যবসায়ীকে। জেলা প্রশাসন গত বছর বিকল্প পৌষমেলা করেছে ঠিকই। কিন্তু, ব্যবসায়ীদের একাংশের কথায়, তা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো।
এ বার পৌষমেলা আয়োজনের আগেই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উপাচার্য পদের মেয়াদ শেষ হতেই অনেকে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। আবারও শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠে পৌষমেলা হওয়া নিয়ে আশাবাদী সাধারণ মানুষও।
মেলার মাঠে পৌষমেলা করার দাবি জানিয়ে গত বুধবার বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে স্মারকলিপি জমা দেয়। তবে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এখনও তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করেননি। অনেকেউ মনে করছেন, এক মাসেরও কম সময়ে এত বড় আয়োজন করা বিশ্বভারতীর পক্ষে খুবই কঠিন।
বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ, কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা বলেন, “আর হাতে সময় নেই। এত কম সময়ের মধ্যে এই ঐতিহ্যপূর্ণ মেলা আদৌ করা যাবে কি না, নিয়ে আমরা চিন্তিত। দূরের বহু ব্যবসায়ীও মেলা নিয়ে আমাদের কাছে খোঁজ নিচ্ছেন। তবে, আমরা আশাবাদী এই মেলা হবে। শুধু চাই, এ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হোক।’’
শান্তিনিকেতনের হোটেল মালিক মিলন হালদার, সুনীল ঘোষ বলেন, “সারা বছর আমরা এই মেলার দিকে তাকিয়ে থাকি। বছরভরের ব্যবসার অনেকটা অংশ পৌষমেলার থেকেই ওঠে। এ বছর বুঝতেই পাচ্ছি না, মেলা হবে কি না। মেলা নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে সকলের সুবিধা হয়।” শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার জানান, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বিশ্বভারতী বরাবর যৌথ ভাবে এই মেলা করে এসেছে। বিশ্বভারতীর ইচ্ছা প্রকাশ করলেই ট্রাস্ট সর্বোত ভাবে সহযোগিতা করবে। যদিও এ নিয়ে বিশ্বভারতীর কোনও বক্তব্য মেলেনি।