পুরুলিয়া শহরের রামদয়ালবাবু লেনের কন্টেনমেন্টে জ়োনে মঙ্গলবার চলল লালারসের নমুনা সংগ্রহ। ছবি: সুজিত মাহাতো
পুরুলিয়ার আদ্রার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এ থাকা পরিবারগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করল কাশীপুর ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গববার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ও আশা কর্মীরা সেখানে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রেলের স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাও। মূলত ‘থার্মাল স্ক্যানার’ দিয়ে কারও জ্বর হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। করোনার উপসর্গ কী, তেমন হলে তাঁদের কী করণীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা সে সম্পর্কে বাসিন্দাদের ওয়াকিবহাল করেন। বিডিও (কাশীপুর) সুদেষ্ণা দে মৈত্র বলেন, ‘‘আগামী ১৪ দিন আদ্রার পুরনো বাজারের একাংশ কন্টেনমেন্ট জ়োন থাকছে। প্রতিদিন সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরা যাবেন।’’
আদ্রার করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মাকে অবশ্য মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরের কোভিড-হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও। তিনি বলেন, ‘‘বৃদ্ধা আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে কোভিড-হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তাঁর লালরসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
তবে ওই বৃদ্ধা ও তাঁর পরিবার-সহ এলাকার ১৮ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট এ দিনও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে আসেনি। ফলে, আদ্রায় নতুন করে আর কেউ করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন কি না, সে বিষয়ে এ দিন বিকেল পর্যন্ত তাঁদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিডিও।
আদ্রার পুরনো বাজার এলাকার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-সহ সারা শহরেই ‘মাস্ক’ পরা ও ‘লকডাউন’ মানার ক্ষেত্রে মঙ্গলবার থেকে কিছুটা কড়াকড়ি শুরু করেছে পুলিশ। এ দিন পুলিশের গাড়িতে মাইক বেঁধে ‘মাস্ক’ পরে বাইরে বেরোনো ও বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে না বেরোনোর আবেদন জানানো হয়েছে।
তবে মঙ্গলবার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এ গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাসিন্দারা প্রায় বাইরে বেরোচ্ছেন না। রাস্তাঘাট ফাঁকা। এমনকি ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর বাইরে ‘বাফার জ়োন’-এও রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ও ‘বাফার জ়োন’-এ দিনভর পুলিশ পাহারা বসানো রয়েছে। আদ্রায় প্রথম করোনা সংক্রামিতের সন্ধান পাওয়ার পরে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বুধবার রাত ৯টার পরে বাজার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মাস্ক না পরে বাইরে বেরোনো ও লকডাউন না মানার অভিযেোগে গত কয়েক দিনে ইতিমধ্যেই আদ্রা থানা ৩৮ জনকে গ্রেফতার করেছে, ১০টি মোটরবাইক ও একটি সাইকেল আটক করেছে। করোনা সংক্রমণের সন্ধান পাওয়ার পরে আদ্রা থানাকে কড়াকড়ি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে।’’