কনভেনশনে ঐশী। নিজস্ব চিত্র।
‘বিশ্বভারতী সহ গোটা দেশে ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে’ গণ কনভেনশন হল বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে। বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রী ঐক্যমঞ্চের আয়োজনে আটটি বাম ছাত্র সংগঠনের সম্মিলিত গণ কনভেনশনে বিশ্বভারতীর একাধিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কৃষি আইন, শিক্ষানীতিরও বিরোধিতা করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষক-ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয়, রাজ্য নেতৃত্ব ছাড়াও বক্তব্য রাখেন পি সাইনাথ। অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন প্রভাত পট্টনায়ক।
কনভেনশনের মঞ্চসজ্জায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীর উপাচার্য হয়ে আসার পর থেকে একের পর এক সিদ্ধান্তের ফল কী হয়েছে, তার তালিকা মঞ্চের সামনেই ছিল। কনভেনশন মঞ্চ থেকে আয়োজক পড়ুয়ারা কোন কোন দাবি রাখতে চলেছে, তারও তালিকা ব্যানার আকারে লাগানো ছিল মঞ্চের পিছনে। ১৫ দফা দাবিপত্রও জানানো হয় ঐক্যমঞ্চের তরফে। যার মধ্যে অগণতান্ত্রিক শো-কজ ও সাসপেনশন প্রত্যাহার, ফি-বৃদ্ধি না করা, রবীন্দ্র আদর্শ বজায় রাখা ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি অন্যতম।
বিশ্বভারতীর পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোর উপরে ফ্যাসিবাদের প্রভাবও আলোচনায় উঠে আসে। ফিরে ফিরে আসে কৃষি আইন এবং কৃষক আন্দোলনের কথা। পি সাইনাথ ৪০ মিনিটের বক্তৃতায় কৃষি আইনের নেতিবাচক দিক তুলে ধরেন। কৃষক, শ্রমিক আন্দোলনে পড়ুয়াদের ভূমিকার ইতিহাস ও সম্ভাবনা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রভাত পট্টনায়ক অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গিতে তার মূল্যায়ন করেন। বিভিন্ন অধ্যাপক সংগঠনের বক্তব্যে উঠে আসে বিশ্বভারতী সহ অন্য শিক্ষাক্ষেত্রে দলীয় আগ্রাসনের কথা। অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, “শিক্ষকদের দায়বদ্ধতা সমাজের প্রতি। রাষ্ট্র বা ক্ষমতার প্রতি নয়।’’
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকার পুঁজিবাদীদের সঙ্গে আঁতাত করে শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কিছু মানুষের কুক্ষিগত করে তুলছে। এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, “বিশ্বভারতীর যে মাটি রবীন্দ্রনাথের আদর্শে সিঞ্চিত, সেখানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনের চেষ্টাকে বন্ধ করা যাবে না। সর্বস্তরের গঠনমূলক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বিশ্বভারতীতে উপাচার্যের ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের পতন ঘটবে।” সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৫.৩০, দীর্ঘ গণ কনভেনশনে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো।