Coronavirus Lockdown

জোড়া ধাক্কায় ষষ্ঠীর বাজার আগুন

জামাইষষ্ঠীর বাজারে ফলের, বিশেষত আমের চাহিদা থাকে বরাবর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০৫:৩৭
Share:

ভিড়: মাস্ক নেই অনেকের মুখে। নেই দূরত্ব বিধির মানার বালাই। জামাইষষ্ঠীর দিনে এমন ছবিই দেখা গেল (উপরে) রামপুরহাট ও (নীচে) বোলপুরে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম ও বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

একদিকে করোনা-পরিস্থিতি, তার উপরে ঘূর্ণিঝড় আমপান। দুইয়ের জোড়া ধাক্কার জের পড়ল জামাইষষ্ঠীর বাজারে। ফল-আনাজ থেকে মাছ-মাংস, সবকিছু কিনতেই হাত পুড়ল। ব্যবসায়ীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, লকডাউনে যাতায়াতে বাধা তার উপরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোগান কম। তাই বেড়েছে দাম।

Advertisement

জামাইষষ্ঠীর বাজারে ফলের, বিশেষত আমের চাহিদা থাকে বরাবর। সেই আমের দামই এ বছর বোলপুর, রামপুরহাট ও জেলা সদর সিউড়িতে বেশ চড়া। করোনা পরিস্থিতিতে লাগোয়া মুর্শিদাবাদ থেকে এ বার আম বিক্রেতারা আসতে পারেননি। তারউপর আমপানের প্রভাবে নদিয়া ও দুই ২৪ পরগণা থেকেও আম আসেনি। জোগান কম থাকায় দাম বেড়েছে এক লাফে অনেকটাই। ঝড়ের দাপটে অন্য বছর যে আম ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় সেই আম বুধবার ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। গতবার যে লিচুর দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, এ বছর তা বিকোচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। আপেল ১২০ থেকে ১৪০, আঙুর ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে। ডাবের দাম বেড়েছে হু হু করে। প্রতিটি ডাব এ দিন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়েছে। আনাজের বাজারে ফুলকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়েছে। টোম্যাটোর দাম কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। রামপুরহাটের ফলের আড়তদার শম্ভু ভকত বলেন, ‘‘লকডাউনের কারণে ফলের আমদানি না থাকায় চাহিদা থাকলেও সেই পরিমাণে জিনিস দেওয়া যাচ্ছে না।’’ বোলপুরের এক ফল বিক্রেতা রাজু সাহানিও বলেন, ‘‘ফলের তেমন আমদানি না থাকায় সব ফলেরই দাম বেড়েছে।’’

মাছ-মাংসের চাহিদাও জামাইষষ্ঠীর বাজারে থাকে। সে সবের দামও ছিল চড়া। পমফ্রেট,গলদা চিংড়ি থেকে শুরু করে সব মাছেরই চাহিদা ছিল তুঙ্গে। এ দিন ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ছিল ৯০০ টাকা, ৮০ গ্রামের পমফ্রেট মাছের দাম ছিল ৬০০ টাকা। চিতল ৩০০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। চিংড়ি ছিল প্রতি কেজি সাড়ে ৩০০ টাকা, বড় গলদা চিংড়ি প্রতি কেজি সাড়ে ৬৫০- ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মুরগির মাংসের দাম প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা ও খাসির মাংসের দাম ছিল ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। মাংস বিক্রেতা গৌতম ঘোষ অবশ্য বলেন,‘‘অন্যবারের তুলনায় এমন কিছু দাম বাড়েনি মাংসের।’’

Advertisement

জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে সব রকম মিষ্টির চাহিদাও ছিল তুঙ্গে। এ দিন বোলপুর, সিউড়ি ও রামপুরহাটের বেশ কিছু মিষ্টির দোকানে জামাইষষ্ঠী লেখা মিষ্টি বিক্রি হতে দেখা যায়। চড়া দাম হলেও বাজারে ভিড়ের কমতি ছিল না। বাহিরি গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতা ঘোষ, অঞ্জলি রায়রা বলেন, ‘‘অন্য দিনের তুলনায় দাম অনেকটাই বেশি। কিন্তু জামাইষষ্ঠী বলে কথা। না বাজার করে উপায় কী!’’ তবে এ দিনের ভিড়ে বাজারে অনেকেই দূরত্ব বিধির তোয়াক্কা করেননি। ভিড়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে বাজার করার ছবি দেখা গিয়েছে জেলার সর্বত্রই। এর জেরে করোনা সংক্রমণ ছড়াবে কি না তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement