উদ্ধার হওয়া পোস্টারগুিলর একটি। নিজস্ব চিত্র
সরকারি আধিকারিকদের ‘হুমকি’ দেওয়া ‘মাওবাদী’ নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার হয়েছে। সোমবার পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার মানপুর, বানজোড়া, তিলাডি, উলদা, ধেলাতবামু গ্রামে পোস্টারগুলি মিলেছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
খবর পেয়ে বরাবাজার থানায় যান জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) চিন্ময় মিত্তল। সেখানে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন তাঁরা। পরে, পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘কয়েকটি পোস্টার উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
গ্রামগুলিতে গিয়ে এ দিন দেখা যায়, সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা পোস্টারগুলিতে পুঁজিবাদ ও রাজ্য সরকারের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার বার্তা রয়েছে। কিছু পোস্টারে মাওবাদী নেতা ধনঞ্জয়ের নাম রয়েছে।
এর সঙ্গে, একটি পোস্টারে এসডিও (মানবাজার) শুভজিৎ বসুর বিরুদ্ধে মানুষকে হেনস্থা করার অভিযোগ এনে সরাসরি ‘খুনের হুমকি’ দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি পোস্টারে বরাবাজারের বিএলএলআরও সমরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়েকেও ‘ঘুষ’ নেওয়ায় অভিযুক্ত করে একই হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মানুষকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ অস্বীকার করে এসডিও (মানবাজার) বলেন, ‘‘আজ পর্যন্ত কোনও ভাবে কাউকে হেনস্থা করিনি। কেন মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে, বুঝতে পারছি না। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।’’ বিএলএলআরও (বরাবাজার) দাবি, ‘‘আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
এলাকার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একাংশের মতে, থানা এলাকার কোনও পঞ্চায়েতে ক্ষমতা বদলের পরেই এ ধরনের পোস্টার মিলছে। বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রতুল মাহাতোর দাবি, ‘‘পোস্টারগুলি মাওবাদীদের নয়। ইচ্ছাকৃত ভাবে এলাকার পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টায় কেউ বা কারা এ কাজ করতে পারে।’’
গত জুলাইয়েও বরাবাজারের কয়েকটি গ্রামে এমন পোস্টার মিলেছিল। এসডিপিও (মানবাজার) রাহুল পাণ্ডে বলেন, ‘‘পোস্টারগুলি মাওবাদীদের নয়। কে বা কারা, এ ধরনের পোস্টার সাঁটিয়ে হুমকি দিয়েছেন, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
এ দিকে, সমাজ মাধ্যমে ‘ভাইরাল’ একটি পোস্টার ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে পুরুলিয়ার মানবাজারে। ‘মাওবাদী’ নামাঙ্কিত ওই পোস্টারে সাদা কাগজে লাল কালি দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।’ তার নীচে লেখা সিপিআই (মাওবাদী)। পোস্টারটি বরাবাজার ও মানবাজার সীমানায় মানবাজার থানার বামনী-মাঝিহিড়া পঞ্চায়েতের কপড়রা গ্রামের কাছে একটি সেতুর স্তম্ভে সাঁটা হয়েছিল বলে সমাজ মাধ্যমের ওই পোস্টে দাবি করা হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, খবর পাওয়া মাত্র অনুসন্ধান চালানো হয়। ওই ধরনের কোনও পোস্টারের সন্ধান মেলেনি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।