সাম্প্রতিক কালে পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশ কয়েক বার মাওবাদী-নামাঙ্কিত পোস্টার মিলেছে।
জঙ্গলমহলে বন্ধ ডাকা হল মঙ্গলবার। মাওবাদীদের নাম করে এমন পোস্টারই সাঁটানো হল পুরুলিয়ায়। মাওবাদী নামাঙ্কিত সেই পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সোমবার সকালে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে হাতে লেখা ওই পোস্টার দেখা গিয়েছে। সেখানে লেখা, আগামী ১ মার্চ অর্থাৎ মঙ্গলবার বন্ধের ডাক দেওয়া হল জঙ্গলমহলে। যদিও এই পোস্টার উদ্ধারের বিষয়টি জেলা পুলিশ অস্বীকার করেছে।
সাম্প্রতিক কালে পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশ কয়েক বার মাওবাদী-নামাঙ্কিত পোস্টার মিলেছে। দিন চারেক আগেও আড়শা থানা এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে এ রকম পোস্টার উদ্ধার হয়। সেই আবহেই এ বার বাঘমুণ্ডি থানা এলাকায় মিলল সিপিআই মাওবাদী-নামাঙ্কিত পোস্টার। কয়েকটি পোস্টারে লেখা, মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য ‘রিমিল ও বিপ্লবের মৃত্যুর বদলা চাই’। একই সঙ্গে মঙ্গলবার বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। আর একটি পোস্টারে জঙ্গলমহলের এসপি ও ডিএসপি-র উদ্দেশে প্রশ্ন, ‘সরকারের কাছে আমাদের খবর যাচ্ছে না কেন, জবাব চাই’। কোনও পোস্টারে আবার লেখা, ‘আমাদের ছেলেকে ভাতা বা চাকরির টোপ দিয়ে আর রাখা যাবে না’। সব পোস্টারের নীচেই হাতে লেখা, ‘সিপিআই মাওবাদী, দলমা বাবা’।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর বামনি ঝোরার কাছে যৌথ বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় মাওবাদীদের দুই স্কোয়াড সদস্য বিপ্লব ও রিমিলের। পুলিশ সূত্রের দাবি, রিমিল অর্থাৎ ধীরেন মুর্মুর বাড়ি পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের কানহা লাগোয়া বেড়সা গ্রামে। ‘দলমা স্কোয়াড’-কে নিজেদের মধ্যে ‘দলমা বাবা’ বলে থাকেন মাওবাদীরা। দলমা স্কোয়াড আসলে মাওবাদীদের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা সীমানা কমিটির অন্তর্গত। এক সময় এই সীমানা কমিটির দায়িত্বে ছিলেন মদন মাহাতো, আকাশ (অসীম মণ্ডল) ও কিষানদা (প্রশান্ত বসু)। কিছু দিন আগেই এনকাউন্টারে কিষানদা এবং মদন নিহত হন। আপাতত আকাশই একক ভাবে ওই সীমানা কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এ রাজ্যের সীমানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ড এলাকায় সক্রিয় মাওবাদীদের দলমা স্কোয়াড। এই দলমা স্কোয়াডই রাজ্যের সীমানা অঞ্চলের থানা এলাকায় নিজেদের সংগঠন চাঙ্গা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। দলের পুরনো কর্মীদের আবার চাঙ্গা করে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা করছে তারা। গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, আবার পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করে তুলতে গেলে রাজ্যে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ জরুরি। সেই লক্ষ্যেই আগামী ১ মার্চ বন্ধের কর্মসূচি নিয়েছেন মাওবাদীরা। এর আগে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতেও বন্ধের ডাক দিয়ে মাওবাদী পোস্টার দেখা গিয়েছিল পুরুলিয়ায়।