Ration

কুপনে ভুল, রেশন পেতে নানা সমস্যা

প্রশাসন সূত্রে খবর, বিলি করা প্রায় আড়াই লক্ষ কুপনের মধ্যে সংখ্যাটা সামান্য হলেও ভূল থাকায় সমস্যায় পড়েছেন বেশ কিছু  গ্রাহক।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনে খাদ্যসামগ্রীর অভাব ঠেকাতে রেশনের কুপন দেওয়া হয়েছে। অথচ কুপনে ভুল থাকায় রেশন সামগ্রী পেতে সমস্যা কমেনি।

Advertisement

ডেউচা গ্রামের প্রৌঢ়া পার্বতী বাগদি রেশন কার্ডের পরিবর্তে যে কুপন হাতে পেয়েছেন, সেটির মাধ্যমে তাঁকে রেশন সামগ্রী পেতে ১৫ কিমি দূরে ভূতুড়া পঞ্চায়েতের খয়রাকুড়ি গ্রামে ছুটতে হবে। একই ভাবে কুপনের ভুলের জন্য রাজনগরের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা আরতি বাগদিকে সিউড়ি ১ ব্লকের কোনও রেশন ডিলার, দুবরাজপুরের সাহাপুর গ্রামের শেখ মহিবুলকে পদুমা থেকে বা সিউড়ি ১ ব্লকের বাসিন্দাকে বোলপুরের রেশন ডিলারের থেকে রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। এমন তালিকা দীর্ঘ।

লকডাউনে দিন আনি দিন খাই মানুষের রোজগার বন্ধ। এই অবস্থায় যাতে খাদ্য সঙ্কট না হয় সে জন্য আগামী ৬ মাস বিনামূল্যে (আরএসকেওয়াই ২ ক্যাটেগরির কার্ড হোল্ডার বাদে) সকলকে রেশন সামগ্রী দেওয়ার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ১ এপ্রিল থেকে রেশন বিলি শুরু হয়েছে। রেশন কার্ড না থাকায় কিছু মানুষ সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা যাতে এই পরিস্থিতিতে খাদ্য সঙ্কটে না পড়েন সে জন্যই কুপন বিলির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর। ঠিক হয়েছিল, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রেশন কার্ডের জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন, অনুমোদন মিলেছে অথচ যাঁরা লকডাউনের আগে পর্যন্ত রেশন কার্ড হাতে পাননি, তাঁদের হাতেই পৌঁছবে কুপন। সেটা হয়েওছে। কিন্তু বিলি করা কুপনে কিছু ত্রুটি থাকায় সমস্যা পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, বিলি করা প্রায় আড়াই লক্ষ কুপনের মধ্যে সংখ্যাটা সামান্য হলেও ভূল থাকায় সমস্যায় পড়েছেন বেশ কিছু গ্রাহক। কারও ঠিকানা ভুল। কাউকে তাঁর নিজের এলাকা থেকে দূরে অন্য গ্রাম, অন্য গ্রাম পঞ্চায়েত বা ব্লকে অন্য কোনও রেশন ডিলারের অন্তর্ভূক্ত করে দেওয়া হয়েছে। কোনও কুপনে ফোন নম্বর ঠিক না লেখা থাকায় অনেক গ্রাহককে তা বিলিই করা যায়নি। আবার এমন অনেক কুপন এসেছে যাঁরা আগেই রেশন কার্ড হাতে পেয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের আগে পর্যন্ত কার্ড পাননি এমন ২ লক্ষেরও বেশি গ্রাহককে কুপন দেওয়া হয়েছে। সেগুলির একটি সামান্য অংশে ত্রুটি রয়েছে।

জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য প্রকাশ্যে এমন সমস্যার কথা মানেননি। জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কুপন ছাপিয়ে সরাসরি খাদ্য দফতর থেকে পাঠানো হয়েছে। এখানে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। এমন কোনও অভিযোগ সামনে আসেনি।’’ তবে একান্তে কর্তাদের একাংশ মানছেন, অনেক ক্ষেত্রেই অন্যের সাহায্য নিয়ে আবেদন করেছেন অনেক গ্রাহক। আবেদন করার তাই ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে গিয়েছে। বিশেষ করে ফোন নম্বর ঠিকানা ভুল থাকায় সমস্যা হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতি দ্রুততার মধ্যে কাজ সারতে চাওয়া।

প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকার মহিলা সঙ্ঘ সমবায়ের সদস্যদের মাধ্যমে কুপন বিলি হয়েছে। তাঁদের অনেকেই বলছেন, ‘‘যাঁদের এমন সমস্যা হয়েছে তাঁরা উল্টে আমাদেরই দোষারোপ করেছেন। অনেক কার্ডের নাম ঠিকানা ও ফোন নম্বর ঠিক না থাকায় বিলি করা যায়নি।’’ জেলার বেশ কয়েকজন বিডিও ঘটনার সত্যতা মেনেছেন। তবে তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রাপ্ত কুপনের ৯৫ শতাংশ সফলভাবে বিলি হয়েছে। কোনও কার্ডই পান নি এমন পরিবারগুলিকে স্পেশ্যাল সাহায্য দেওয়া শুরু হয়েছে। তাই সমস্যা তেমন কিছু নয় বলে তাঁদের দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement