শিল্প: কাজ চলছে জোরকদমে। নিজস্ব চিত্র
৩৮ বছর ধরে পথ চলা। ৮ বছর ধরে থিমের পুজো। কখনও খাজুরাহোর মন্দির হয়ে পিরামিডের দেশ। কখনও অরণ্য-সমুদ্রের তলদেশের না দেখা সুন্দরের জগতের অনুভূতি। এ বার মণিপুরি নাচের অঙ্গন। উত্তর পূর্ব ভারতের ছোট্ট সেই সবুজে ঘেরা মণিপুরের সাংস্কৃতিক অভিমুখকে এ বার দুর্গা পুজোয় থিম করেছে সিউড়ির ‘চৌরঙ্গি।’
কেন এমন থিম?
প্রশ্নের উত্তর দিলেন ক্লাব কোষাধ্যক্ষ দেবাশীষ ধীবর। বললেন, ‘‘আমাদের জেলার শান্তিনিকেতনের সঙ্গে মণিপুরি নাচের যোগসূত্রে রবীন্দ্রনাথের ভূমিকাকে সন্মান জানাতে এবারের এই থিমের ভাবনা। মণিপুরি নাচের সঙ্গে নিবিড় সর্ম্পকের বাঁধন গড়ে ওঠে কবিগুরুর মাধ্যমেই। তাই এই থিম।” মণিপুরি নাচের আঙ্গিক এ বারের চৌরঙ্গির পুজোর মণ্ডপ জুড়ে।
মণ্ডপের সামনে কুড়ি ফুট লম্বা কৃষ্ণমূর্তি যার দুই পাশে দুটি নাচের মূর্তির মধ্যে দিয়ে দর্শকরা ঢুকবেন মুল মণ্ডপে যেখানে রাস মঞ্চ। এই রাস মঞ্চে মোট ছটি পুতুল থাকছে। তারা মণিপুরি নৃত্যের মুদ্রায় থাকবে। আবহে ভেসে বেড়াবে গানের সুর। সঙ্গে আলোর মায়াবি পরিবেশ তৈরি হবে। বরাবরের মতো এবারেও শহরের বিশিষ্ট আলোক শিল্পী বিশ্বনাথ বিশ্বাসের ভাবনা রয়েছে।
নাচের শিল্পীদের আদলেই এ বার সপরিবারে মা দুর্গাও। নাচের আদলে দেবীর পোশাকেও থাকবে মনিপুরি নাচের ছোঁয়া। নাচের গয়না তানখাক, তাংখা, রতন চুড়, সেনাখুজি, পারেঙ, ঝাপা ইত্যাদি কীভাবে ব্যবহার হবে সেটাই চ্যালেঞ্জ কর্মকর্তাদের। প্রতিমা গড়ছেন জয়দেব সূত্রধর আর থিম শিল্পী প্রেমনাথ সূত্রধর। জোর কদমে চলছে ফাইবার এর পুতুল তৈরি। এ ছাড়া পাট, মাটি, বাঁশ ব্যবহার হবে মণ্ডপ সজ্জায়।
স্থানীয় মণিপুরি নাচের শিল্পী শিক্ষক শুভদীপ সরকার এই থিমের ভাবনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘মণিপুরি নাচের এই থিম নাচ জানা বা না জানা সব দর্শকদেরই ভালোলাগবে। আর সেখানেই হবে সার্থকতা।” এখন সময়ের অপেক্ষা, আগামী পঞ্চমীর সন্ধ্যা পর্যন্ত।