আদর: দাদুর সঙ্গে নাতনি। নিজস্ব চিত্র
মুম্বইবাসী নাতনিকে তার জন্মদিনে আনন্দ দেওয়ার সাধ ছিল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের তুঁতবাড়ির বাসিন্দা বংশীবদন দিকপতির। বুধবার ন’বছরে পা দেওয়া অন্নিকার করোনা-পরিস্থিতির জন্য বিষ্ণুপুরে আসা হয়নি। তাই দিনটি অন্য ভাবে পালন করতে নাতনির জন্মদিন পালনের জন্য রাখা ১০,১০১ টাকা বংশীবদনবাবু তুলে দিলেন কিডনির সমস্যায় অসুস্থ এক যুবকের চিকিৎসায়।
এক সময়ে চালকল ছিল বংশীবদনবাবুর। তিনি বলেন, “মেয়ে-জামাই মুন্বইয়ে থাকলেও নাতনির জন্মদিনে ওরা এখানে আসে। এ বারও কত আনন্দ করব ভেবেছিলাম। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতিতে সব ভণ্ডুল হয়ে গেল। তাই নাতনির জন্মদিনের আয়োজনটা পাল্টে ফেললাম। শুনলাম, বিষ্ণুপুরের মড়ার গ্রামের এক যুবক কিডনির অসুখে ভুগছে। নাতনির জন্মদিনের খরচ বাবদ রাখা টাকা অসুস্থ ছেলেটির বন্ধুদের হাতে তুলে দিলাম।’’
মড়ার গ্রামের বছর পঁচিশের অতনু ঘোষের দু’টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে পরিবার সূত্রের দাবি। বর্তমানে তিনি বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করা দরকার। ওই যুবকের বাবা-মা অশোক ঘোষ ও মিনতি ঘোষ মুড়ি ভেজে সংসার চালান। তাই চিকিৎসার খরচ তুলতে অতনুর বন্ধু শুভঙ্কর লাই, দিল খান, রাজু দাস, অতনু দত্তেরা টাকা জোগাড় করতে ঘুরছেন। পাশে দাঁড়িয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।
অতনুর ওই বন্ধুদের থেকেই খবর পেয়ে বংশীবদনবাবু সাহায্য করার কথা ভাবেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর ছেলের জন্য সবার এই উদ্যোগে আপ্লুত মিনতিদেবী। তিনি বলেন, ‘‘এত মানুষের ইচ্ছাশক্তি কি বৃথা যেতে পারে? আমার ছেলে নিশ্চয় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসবে।’’