সেই হাতি। (ইনসেটে) মৃত রবি রায়। নিজস্ব চিত্র।
হাতির হানায় মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। শুক্রবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের ফুলবাড়ি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত রবি রায় (৬২) ফুলবাড়িরই বাসিন্দা। এ দিন সকালে বাড়ির সামনে হাতির মুখোমুখি পড়েন তিনি। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে বেলিয়াতোড় গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) কল্যাণ রাই বলেন, “মৃতের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ ও সুযোগ-সুবিধা
দেওয়া হবে।”
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন ভোরে হাতিটি লাগোয়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ‘বিডিআর’ রেললাইন পার করে বেলিয়াতোড়ে ঢোকে। সেখান থেকে হাতিটি ফুলবাড়িতে দিকে এগোয়। পেশায় দিনমজুর ওই বৃদ্ধ সে সময়ে শৌচকর্ম সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির সামনেই হাতির মুখোমুখি পড়ে যান তিনি।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। পরে, পা দিয়েও আঘাত করে। মৃতের স্ত্রী গীতা রায় বলেন, “লোকজনের হইচই শুনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখি, স্বামী জখম হয়ে পড়ে রয়েছেন। এমন কিছু হতে পারে, কল্পনাও করিনি!” মৃতের পরিবারের দাবি, সরকারি প্রকল্পে বাড়িতে শৌচাগার গড়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বাড়ির বাইরে শৌচকর্ম সারতে যেতে হয় সকলকে। ঘটনার পরে, অত্যন্ত ভয়ে রয়েছেন তাঁরা। বিডিও (বড়জোড়া) সুরজিৎ পণ্ডিতের আশ্বাস, “কেন ওই বাড়িতে শৌচালয় নেই, তা পঞ্চায়েতের কাছে জানতে চাইব। এলাকার অন্য কারও বাড়িতে শৌচালয় না-থাকলে খোঁজ নেওয়া হবে। দ্রুত এ নিয়ে পদক্ষেপ হবে।”
ঘটনার পরে, মৃতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও গ্রামে হাতি ঢোকা রুখতে দরকারি পদক্ষেপের দাবি তুলেছে হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সংগ্রামী গণমঞ্চ। সংগঠনের নেতা শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলায় বার বার হাতির হানায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বন দফতর হাতিগুলিকে সরানোর ব্যবস্থা করুক।”
এ দিন মৃতের বাড়িতে যান বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কালীদাস মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মৃতের পরিবার যাতে সমস্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধা দ্রুত পান, তার জন্য বন দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।” বন দফতর জানায়, স্থানীয় একটি হাতিই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। হাতিটির গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।