প্রতীকী ছবি।
পুরুলিয়া জেলার বিধানসভা কেন্দ্র ন’টি। আর ওই ক’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রায় ৩০০ জন আবেদন করেছেন বলে দাবি জেলা বিজেপি নেতৃত্বের। তৃণমূলের প্রার্থী নির্বাচন কী ভাবে হচ্ছে, তা অবশ্য খোলসা করেননি জেলা নেতৃত্ব। বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী তালিকা নিয়েও জল্পনা রয়েছে জেলাজুড়ে।
প্রথম দফাতেই এ বার পুরুলিয়া জেলায় নির্বাচন। শুক্রবার নির্বাচন কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেও শনিবার পর্যন্ত কোনও দলই তাঁদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি। এ দিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলির হাতে সময়ও বেশি নেই।
আগামী মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৯ মার্চ। ফলে যাঁরা প্রার্থিপদ পেতে আবেদন করেছেন, তাঁরা প্রবল মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে। কেউ কেউ প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে যে যার মতো করে খুঁটি ধরা শুরু করেছিলেন। এ বার তাঁদের তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে।
পুরুলিয়া জেলায় বিজেপি কার্যত শূন্য থেকে খাতা খুলেছে পঞ্চায়েত ভোটে। পরের বছর লোকসভা ভোটে জেলার ন’টির মধ্যে আটটি বিধানসভাতেই তারা প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে এগিয়ে ছিল। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের দলের প্রার্থী হতেই আগ্রহ বেশি। দলের অন্দরের খবর, জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে ৩০০-র বেশি জন জীবনপঞ্জি (বায়োডেটা) জমা করেছেন।
সূত্রের খবর, কাশীপুর ও পুরুলিয়া কেন্দ্রের প্রতিটির জন্য সত্তরটির বেশি করে আবেদন জমা পড়েছে। দু’টি কেন্দ্রই অসংরক্ষিত। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে রঘুনাথপুর ও পাড়া কেন্দ্রে বিজেপি ফল ভাল করেছিল। ওই দুই কেন্দ্র সংরক্ষিত হলেও সেখানে প্রার্থী হতে চেয়ে অনেকে আবেদন করেছেন। সূত্রের দাবি, রঘুনাথপুরে পঁচিশটির বেশি আবেদন এসেছে। পাড়াতে দাবিদারের সংখ্যা দ্বিগুণ।
বলরামপুর ও জয়পুর কেন্দ্র দু’টি অসংরক্ষিত হলেও প্রতিটি জন্য পঁচিশের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছে। জেলার বাকি তিনটি কেন্দ্র বাঘমুণ্ডি, বান্দোয়ান ও মানবাজার কেন্দ্রের জন্য ১৫ থেকে ২০টির মতো আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে যেমন দলের বিভিন্ন স্তর বা শাখা সংগঠনের পদাধিকারীরা রয়েছেন, তেমনই আছেন শিক্ষা-সংস্কৃতি ক্ষেত্রের মানুষজন, আইনজীবী, কৃষিজীবী বা হরিনাম সংকীর্তনের সঙ্গে যুক্ত লোক।
বিজেপি শিবিরের দাবি, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছিল আটটি। পাঁচ বছরের ব্যবধানে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে শতাধিক আবেদনপত্র জমা পড়ে। পুরুলিয়া জেলা বিজেপি সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরুলিয়া ও কাশীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে সব থেকে বেশি আবেদন এসেছে। আবেদনকারী তিনশোর বেশি হলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রের এত মানুষ যে বিজেপির প্রার্থী হতে চাইছেন, এটা সদর্থক। নেতৃত্ব যাঁদের প্রার্থী করবেন, দল তাঁদের জন্য কাজ করবেন।’’ দলের জেলা সহ-সভাপতি রবীন সিংহ দেও দাবি করেন, ‘‘যাঁরা প্রার্থী হতে পারবেন না, তাঁদের নিয়ে সমস্যা হবে না। সবাই এককাট্টা হয়ে লড়ব।’’
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বিধায়কেরাই থাকবেন না নতুন মুখ উঠে আসবে, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের অনেকের মনেই টেনশনের চোরাস্রোত বইছে। দলের পুরুলিয়া জেলা মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘প্রার্থী ঘোষণা করবে দল। সবার রিপোর্ট কার্ড দলের কাছে রয়েছে। প্রত্যেকের কাজই দলের তরফে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমরা ভোটের জন্য প্রস্তুত।’’
জেলা বাম শিবিরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আসন রফা একপ্রকার হয়ে আছে। পুরুলিয়া জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘জেলার প্রার্থী তালিকা রাজ্য থেকেই ঘোষণা করা হবে।’’