নলহাটি ২ ব্লকে আকালীপুরে গুহ্যকালী মন্দিরে পুজো দিলেন বিজেপি নেতৃত্ব ও কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বার শপথ নিলেন রবিবার। এই উপলক্ষে আগের মতো উদ্দীপনা চোখে পড়ল না বীরভূম জেলা বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। রাজ্যে তো বটেই, দেশেও বিজেপির তুলনামূলক খারাপ ফলাফলের কারণেই এই প্রতিক্রিয়া বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন অনেকেই। রবিবার জেলার কয়েকটি এলাকায় বড় পর্দা টাঙিয়ে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার ও মিষ্টি বিলির কর্মসূচি করে বিজেপি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্র সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। সে বছর রাজ্য থেকেও ১৮টি আসনে পেয়েছিল তারা। ফলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর দ্বিতীয় বার শপথগ্রহণ ও রাজ্যের এতজন সাংসদের উপস্থিত থাকার ঘটনাকে উদ্যাপন করতে বিশেষ আগ্রহ ছিল বিজেপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। বীরভূম জেলায় দু’টি লোকসভা আসনেই বিজেপি প্রার্থী পরাজিত হলেও দেশ ও রাজ্যের সার্বিক ফলাফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন তাঁরা।
এ বারের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। রাজ্যে যেখানে গত বারের তুলনায় আরও ভাল ফল করার স্বপ্ন দেখছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব, সেখানে এক ধাক্কায় ছ’টি লোকসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে তাঁদের। গোটা দেশেও ‘৪০০ পার’-এর যে স্লোগান প্রচারিত হয়েছিল, তার আশেপাশেও পৌঁছতে পারেননি তাঁরা। মেলেনি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাও। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলিতেও ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। ফলে ভোটের ফল প্রকাশের দিন থেকেই বিজেপি শিবিরে উৎসাহ স্তিমিত। জোট শরিকদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে তৃতীয় বারের জন্য নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন নিয়েও উচ্ছ্বসিত নন তেমন কেউ।
উনিশের লোকসভায় সিউড়ি, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট, মহম্মদবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় বড় পর্দায় মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান দেখানো ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিজেপির পক্ষ থেকে। তবে এ বার সিউড়ি, সাঁইথিয়া বা দুবরাজপুরে কোনও বিশেষ আয়োজন করা হয়নি। রবিবার সন্ধ্যায় সিউড়ির জেলা কার্যালয়ের বড় টিভিতে শপথগ্রহণের সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল। সেখানেই জেলা ও স্থানীয় স্তরের দলের কয়েক জন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তবে বছর পাঁচেক আগের মতোই এ বারও বিজেপির রামপুরহাট শহর কার্যালয় সংলগ্ন কামারপট্টি মোড়ে বড় পর্দা লাগিয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান দেখানো হয়। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ একটি বড় ঘটনা। আমরা তা সকলের সামনে তুলে ধরছি। উপস্থিত কর্মীদের মিষ্টিমুখও করানো হয়েছে।”
বোলপুরের কাছারিপট্টি এলাকায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার ও ময়ূরেশ্বর বিধানসভার মল্লারপুরের শিববাড়িতে ময়ূরেশ্বর ১ মণ্ডল কমিটির উদ্যোগে মিষ্টি বিলি করা হয়। সেখানে একটি ছোট অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় এ দিন। মহম্মদবাজার বাস স্ট্যান্ডেও এ দিন মহম্মদবাজার ৩ মণ্ডলের পক্ষ থেকে মিষ্টি বিলি করা হয়। হাসন বিধানসভার সাহাপুর অঞ্চলের বেসিক মোড়েও চলে মিষ্টি বিলি। সকালে নলহাটি ২ ব্লকের ভদ্রপুর ১ পঞ্চায়েতের আকালীপুর গ্রামে গুহ্যকালী মন্দিরে পুজো দেন হাসন ২ মণ্ডলের বিজেপি নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদীর মঙ্গলকামনায় এই পুজো দেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে। পুজো শেষে সকলকে লাড্ডু বিতরণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মণ্ডল সভাপতি মলয় অধিকারী, পঞ্চায়েত সদস্য উৎপল জয়পুরি-সহ অন্যেরা।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা, সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর গড়াই-সহ জেলার বেশ কয়েক জন শপথগ্রহণের সাক্ষী থাকতে এ দিন দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছিলেন।