প্রতীকী ছবি।
গত বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলায় তৃণমূলের তাবড় কিছু প্রার্থী নিজের গড়ে হেরে গিয়েছেন। তার পিছনে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একটা বড় কারণ, দলের অন্দরের ব্যাখ্যাতেই সে কথা স্পষ্ট। লোকসভা ভোটে আগের বারের সাংসদ মুনমুন সেনের বদলে এ বার বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী করা হয়েছে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। তিনি রাজ্যের প্রবীণতম মন্ত্রী। বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে আগেও লোকসভা ভোটে লড়েছেন। কিন্তু গোষ্ঠিদ্বন্দ্বের কাঁটা যে এখনও বিঁধছে, কর্মিসভায় নেতাদের কথা থেকেই সেটা এক প্রকার স্পষ্ট হল।
সোমবার বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে কর্মিসভা করেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন সুব্রতবাবুও। সেখানে অভিষেক কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ কারও থাকতেই পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, এটা পঞ্চায়েত নয়। জেলা পরিষদ নয়। বিধানসভা ভোটও নয়। এটা দিল্লির লড়াই। সাম্প্রদায়িক মোদীর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই।” সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল পার্টি একটাই। এখানে দুটো বলে কিছু নেই। এটা মনে রেখে কাজ করলে জয় নিশ্চিত।”
গত বিধানসভা ভোটে দখলে থাকা পাঁচটি কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছিল শাসকদলের। সোমবার বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে কর্মিসভার মঞ্চ থেকে অভিষেক নিদান দেন, জেলা নেতারা রাজ্যের বিষয়ে নাক গলাবেন না। একই ভাবে ব্লক, অঞ্চল ও বুথের নেতারাও নিজের এলাকার বাইরে নজর দেবেন না। নিজের এলাকায় নিজেদের কাজ মন দিয়ে করতে হবে। যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক নেতাকর্মীদের বলে গিয়েছেন, ‘‘ভাল কাজ করলে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজে বের করে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হবে।”
তিনি জানান, ভোটের আগে জেলায় থাকবেন। যেখানে সমস্যা হবে, প্রার্থীকে নিয়ে গিয়ে প্রচার করবেন। কুড়ি থেকে বাইশটি মিটিং করবেন বাঁকুড়ায়।
ভোটের মুখে কর্মীদের প্রতি তৃণমূল নেতৃত্বের এই বার্তায় কটাক্ষ করছে বিজেপি। দলের রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “বছরভর যখন এই জেলায় ওদের গোষ্ঠিদ্বন্দ্বে রক্ত ঝরে তখন রাজ্য নেতৃত্ব চুপ থাকেন। কেবল ভোট আসলেই দ্বন্দ্ব মেটানোর কথা মনে পড়ে।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই তৃণমূলের অলঙ্কার। ওদের নেতারা মুখে যতই নিষেধ করুন, নিজেরাও জানেন এটা মেটার নয়।”
তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘সিপিএম আর বিজেপির যা অবস্থা, প্রার্থী খুঁজতে এ বার বিজ্ঞাপন দিতে হবে। তৃণমূল নিয়ে ওঁদের মুখে কোনও কথাই শোভা পায় না।’’