প্রতিবাদী: কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ক্ষোভপ্রকাশ করলেন শিল্পীরাও। বুধবার ধিক্কার মিছিল বের হয় বোলপুরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
রোষ থেকে বাদ যায়নি বিদ্যাসাগরের মূর্তিও! দেশজুড়ে বইছে প্রতিবাদে ঝড়। কেউ হতবাক, কেউ ক্ষুব্ধ। বুধবার দিনভর বীরভূমের নানা প্রান্তেও মিছিল, সভা করে এমন ঘটনায় ধিক্কার জানানো হল। সিউড়িতে আবার তৃণমূলের মিছিল থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি-ভাঙার প্রতিবাদে সাঁইথিয়া ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে ধিক্কার মিছিল হয় সাঁইথিয়ায়। মসোড্ডা গ্রামের ব্লক তৃণমূল কার্যালয় থেকে ধিক্কার মিছিল বের হয়। নেতৃত্ব দেন ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জীবানন্দ বাগদি প্রমুখ। সাঁইথিয়া শহর তৃণমূল, তৃণমূল যুব কংগ্রেস ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকেও ধিক্কার মিছিল হয়। সাঁইথিয়া অভেদানন্দ মহাবিদ্যালয়ের সামনে থেকে ওই মিছিল শহর পরিক্রমা করে। মহম্মদবাজার তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিকেল পাঁচটা নাগাদ অঞ্চল সভাপতি অলক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মী নিয়ে ধিক্কার মিছিল করা হয়। হাটতলা পার্টি অফিস ঘুরে বাসস্ট্যান্ডে ফিরে আসে।
মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রোড-শো থেকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল বিদ্যাসাগর কলেজে। হামলা থেকে বাদ যায়নি বিদ্যাসাগরের মূর্তিও।
বুধবার বিকেলে সিউড়ি, রামপুরহাটের সঙ্গে বোলপুরেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে ধিক্কার মিছিল হয়। বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয় থেকে একটি ধিক্কার মিছিল বের হয়ে মসজিদ রোড পরিক্রমা করে কার্যালয়ে এসেই শেষ হয়। মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন কাউন্সিলর, বিধায়ক। কয়েক’শো লোক হয়েছিল।
শুধু রাজনৈতিক দল নয়। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে লেখক শিল্পী সঙ্ঘ সহ কিছু উদ্যোমী মানুষের উদ্যোগেও ধিক্কার মিছিল হয়। পা মেলান নাট্যকর্মী থেকে শুরু করে কবি, লেখক, সাংস্কৃতিক জগতের মানুষেরা। বোলপুর শহর ঘুরে মিছিল শেষ হয় উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে। মিছিল থেকে দাবি ওঠে এমন কাজ যারা করতে পারে, তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। সিউড়ি পুরসভা সামনে পথসভা করে এসইউসি। পথসভা থেকে এসইউসি-র কর্মী-সমর্থকেরা ঘটনার জন্য বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করেছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান।
এ দিন বিকেলে সিউড়িতে তৃণমূল কার্যালয় থেকেও ধিক্কার মিছিল বের করা হয়। মিছিলে ছিলেন সিউড়ি পুরসভার উপপুরপ্রধান বিদ্যাসাগর সাউ, সিউড়ি শহর তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার সহ প্রায় ৫০০ তৃণমূল কর্মী। ওই মিছিল সিউড়ি শহর পরিক্রমা করে। মিছিল থেকে তৃণমূলের কর্মীরা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বিজেপি কর্মী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। বিদ্যাসাগর সাউয়ের কথায়, ‘‘আমাদের মূল দাবি হল অমিত শাহ এবং ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করতে হবে।’’
একই ভাবে এ দিন বিকেলে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বামপন্থী সংগঠনগুলির উদ্যোগে বিক্ষোভ-সভা হয়। সেখানেও মূল দাবি ছিল, ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের কড়িধ্যা গ্রামে সিপিএমের প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় রামপুরহাটেও ধিক্কার মিছিল করে তৃণমূল, সিপিএম, এসইউসিআই।