ভোট চেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরলেন রেজাউল, অসিতেরা

টানা প্রচারে যুযুধান ডান-বাম

গ্রামের পথে পায়ে হেঁটে জনসংযোগ সারেন এই কেন্দ্রের বাম প্রার্থী রেজাউল করিম। লাভপুরে প্রচারে ছিলেন বোলপুর আসনের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালও। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বীরভূম শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৫:২৪
Share:

লাভপুরে অসিত মাল। নিজস্ব চিত্র

কেউ মন্দিরে, কেউ গ্রামের পথে। ভোট প্রচারে ডান-বাম সব দলের প্রার্থীরাই সোমবার দিনভর প্রচারে রইলেন। তারাপীঠে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেন বীরভূম লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল। নলহাটির আকালীপুর গ্রামে গুহ্যকালীর পুজো দেন বীরভূম আসনের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। গ্রামের পথে পায়ে হেঁটে জনসংযোগ সারেন এই কেন্দ্রের বাম প্রার্থী রেজাউল করিম। লাভপুরে প্রচারে ছিলেন বোলপুর আসনের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালও।

Advertisement

তারাপীঠ থানা এলাকার একাধিক গ্রামে সোমবার দুপুরে প্রচারে যান দুধকুমার। ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বীরভূমের দামাল ছেলে দুধকুমার মণ্ডলকে জয়ী করুন’ এই সমস্ত শ্লোগান ছিল। দুধকুমারও পথচলতি মহিলা, যুবক থেকে বৃদ্ধের কাছে হাতজোড় করে আর্শীবাদ চেয়ে নেন।

পুজো দিয়ে প্রচারে বেরোনোর আগে দুধকুমার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ রাখেন। রাজনৈতিক সন্ন্যাস-পর্বের পরে ফিরে এসে কেমন লাগছে, জানতে চান সাংবাদিকরা। দুধকুমার বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন বিজেপি থেকে সরে যায়নি। দল তখন সেই ভাবে দায়িত্ব দেয়নি। পরে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজেপির হয়ে জয়ী হয়েছি। এখন দল বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে। সেই

Advertisement

দায়িত্ব পালন করতে পথে নেমেছি।’’ প্রচারে বেরিয়ে দুধকুমার দাবি করেন, ‘‘আমি স্থানীয় প্রার্থী। আর তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় বহিরাগত এবং বসন্তের পাখি। ভোটের পরে মানুষ তাঁর দেখা পায় না।’’

বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিমও সোমবার প্রচার সারলেন মহম্মদবাজার ও সাঁইথিয়ার বিভিন্ন গ্রামে। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ মহম্মদবাজারে সিপিএম কার্যালয়ে পৌঁছন। স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরে বেরিয়ে পড়েন প্রচারে। মহম্মদবাজারের কাঁইজুলি, বোর্ডিংপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে যান। রেজাউল করিমের কথায়, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝতে পারলাম, এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি ধর্মীয় প্রচার তুলে ধরছেন মানুষের মধ্যে। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বিভেদের। এই ব্যবস্থা বন্ধ করতে মানুষের কাছে আবেদন রেখেছি। এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সেই ডাকে সাড়া দিয়েছেন।’’

সিপিএম প্রার্থীকে এলাকার জলের সমস্যা, বেশ কিছু রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠে আসে। রেজাউলের কথায়, ‘‘আমি তো প্রচারের মধ্যেই বেশ কিছু অসুস্থ মানুষ ও মহিলাদের দেখলাম। যাঁদের এখনও পর্যন্ত হাতুড়ে চিকিৎসা চলছে। দু’জন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছাত্রের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, তারা

এখনও ঠিক করে জানে না কোথায় গিয়ে আবেদনপত্র জমা করতে হবে।’’ বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সাঁইথিয়ার ইউনিয়ন বোর্ড থেকে সিপিএম নেতৃত্বদের সঙ্গে নিয়ে রোড শো করে প্রচার করেন রেজাউল। পায়ে হেঁটে প্রচার করেন সাঁইথিয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শেষ প্রান্ত বোলসুণ্ডা মাঠ পর্যন্ত। এখানেও বহু সমস্যার কথা উঠে আসে।

এ দিন নলহাটির আকালীপুর গ্রামে গুহ্যকালীর পুজো দেন তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। এরপরেই বিভিন্ন গ্রামে প্রচার সারেন। কেউ উলু দিয়ে বরণ করে নেন। কেউ তোলেন নিজস্বী। ভক্তের আবদার শুনে, শতাব্দী একবার চশমাও খোলেন। মোস্তফাডাঙা গ্রামের এক বয়স্ক মহিলা শতাব্দীর মাথায় হাত রেখে বলেন, ‘‘মা সুখে থাকো, ভাল থাকো। তোমাকে আবার দেখব ভাবিনি।’’ এর পরে শতাব্দী চলে যান ভদ্রপুরে। গ্রামের মৌসুমী ভট্টাচার্যের মতো গৃহবধূরা তাঁকে শঙ্খ বাজিয়ে উলু দিয়ে বরণ করে নেন। সেখান থেকে নগরা হয়ে নব হিমায়েতপুরে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের আশ্রমে আনন্দ বাজারে যোগ দেন। শতাব্দীকে দেখার জন্য নওয়াপাড়া ১ নম্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা টিফিনের সময় ভিড় জমায়। নলহাটি-২ ব্লকের ভদ্রপুর অঞ্চলের তৃণমূলের সভায় ছিলেন জেলা

সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য, বিভাস অধিকারী, আবু জাহের রানা, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সৈয়দ সিরাজ জিম্মিও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement