অর্পণ: জেলাশাসকের হাতে মনোনয়নপত্র রেজাউল করিমের। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নয়, তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি— শনিবার মনোনয়ন জমা দিয়েই এমনই মন্তব্য করলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিম। তাঁর কথায়, ‘‘জিতবো বলেই ভোটে লড়তে নেমেছি। মূল প্রতিপক্ষ আমার মতে বিজেপি।’’
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল, তৃণমূল নয় কেন? রেজাউলের উত্তর, ‘‘তৃণমূল অনেক জায়গায় শক্তিশালী। তবে আমার লড়াই হবে বিজেপির সঙ্গেই।’’ তার ব্যাখ্যাও অবশ্য দিয়েছেন বীরভূমের বামপ্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘দু’টো দলই গণতন্ত্রের পক্ষে সমান বিপজ্জনক। তবে বিজেপি এতে আরও এগিয়ে কারণ, এরা ধর্মীয় মতাদর্শ নিয়ে লড়াইয়ে বিশ্বাসী। তাতে মানুষে মানুষে বিভাজন বাড়ছে।’’
সিপিএম সূত্রে খবর, তাঁদের দুই প্রার্থী রেজাউল করিম ও বোলপুরের রামচন্দ্র ডোমের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিল শনিবার। কিন্তু শুক্রবার রাতে সিদ্ধান্ত বদল করে সোম বা মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ভাবা হয়। প্রশাসনকেও এ বিষয়ে জানানো হয়েছিল। তবে কলকাতা হাইকোর্টে রেজাউল করিমের ছুটি সংক্রান্ত একটি মামলার ইতিবাচক রায় বেরনোর পরেই শনিবারই তাঁর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই মনোনয়ন দাখিল করা নিয়ে কিছুটা হলেও গোপনীয়তা রাখতে চাইছিল সিপিএম। দলের অন্দরের খবর, এ নিয়ে শাসক দল নতুন কোনও চাল না চালে, সে জন্যই তেমন ভাবা। এমনকী প্রার্থীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কিছু সমস্যা থাকলেও তড়িঘড়ি তা এ দিন সকালের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা হয়। রেজাউলকে নিয়ে বামেরা জেলা প্রশাসন ভবনে পৌঁছন দুপুর দু’টোর পরে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে হতে বিকেল চারটে বেজে যায়। তবে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত বদল নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বামনেতারা, প্রার্থী নিজেও।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রেজাউল বলেন, ‘‘আজ আমি মনোনয়ন জমা দিলাম। ৯ এপ্রিল সম্ভবত রাম’দা (রামচন্দ্র ডোম) জমা দেবেন।’’ এর বাইরে আর কিছু তিনি বলতে চাননি।
গত কয়েক দিন প্রশাসন ভবনকে ঘিরে নিরাপত্তার যেমন আঁটোসাঁটো ভাব ছিল, ছুটির দিন হওয়ায় এ দিন কিছুটা হলেও তা ঢিলেঢালা ছিল। এ দিন একমাত্র রেজাউলই প্রশাসন ভবনে আসেন। দলের কর্মী এবং সাধারণ মানুষের ভিড় তেমন ছিল না।
শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন শাসক দলের দুই প্রার্থী— শতাব্দী রায় ও অসিত মাল। তাঁরা নিজেদের জেতার বিষয়ে আশাবাদী হলেও, প্রধান প্রতিপক্ষের নাম বলতে চাননি। তাঁদের মন্তব্য ছিল— ‘প্রতিপক্ষ বলতে কেউ-ই নেই।’ সেখানে শাসক দলকেই উহ্য করে রেজাউল বিজেপির নাম বলায় রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল ছড়িয়েছে।