ভোট-ময়দানে: সিউড়িতে ইমাম হোসেন, অভিজিৎ সাহা। নিজস্ব চিত্র
নেই কোনও জনসভা, এমনকি সদর শহরে ব্যানার-ফেস্টুন-পতাকারও দেখা মিলছে না। আর দেওয়ালে দেওয়ালে প্রচার বলতে সিউড়ি বড়বাগান এলাকায় দু-একটি দেওয়াল লিখন ছাড়া আর কিছুই নেই।
সোমবার সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়ন দাখিল করেন জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইমাম হোসেন এবং অভিজিৎ সাহা। কার্যত নিরবেই মনোনয়ন দাখিল করলেল তাঁরা। মনোনয়ন দাখিলের দিনও দেখা মেলেনি সিউড়ি শহরের নেতা কর্মীদের। এখনও জেলার সদর শহরে কোনও প্রচার শুরু করেনি কংগ্রেস। প্রার্থীদেরও ভোট চাইতে দেখেননি ভোটাররা।
মনোনয়ন জমা দিলেও সিউড়ি শহরে এখনও পর্যন্ত কেন কোনও প্রচার করতেই পারেনি কংগ্রেসের নেতৃত্ববৃন্দ? বীরবূম জেলা কংগ্রেসের অন্দরের খবর, গোষ্ঠীকোন্দলের কারণেই প্রচার করতে পারেনি তারা। দেওয়াল লিখন-সহ প্রচার প্রসঙ্গে ইমাম হোসেন বলেন, ‘‘আমরা তো সোমবার মনোনয়ন জমা দিলাম। এবার দেওয়াল লিখন করা হবে। তাছাড়া কংগ্রেসের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা-ভরসা আছে, তাই মানুষ এমনিতেই ভোট দেবেন। দেওয়াল লিখনের দরকার হবে না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু দলেরই একাংশের দাবি, মাস খানেক আগেও কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ছিলেন সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। তাঁকে পদ থেকে সরানো হয় এবং নতুন জেলা সভাপতি হন সঞ্জয় অধিকারী। কিন্তু দলের এই সিদ্ধান্তকে মানতে পারছেন না বেশ কয়েকজন নেতা। এমনকি লোকসভা ভোটের প্রার্থীদেরও পছন্দ নয় কিছু নেতা-কর্মীর। সেই জন্যই জেলা কংগ্রেসের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল তৈরি হয়েছে। যদিও গত ৩ এপ্রিল সিউড়ি রামকৃষ্ণ সভাগৃহে একটি নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করে কংগ্রেস। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলার একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রসিদ, সিউড়ি মহকুমার কংগ্রেস সভাপতি অসীম মুখোপাধ্যায়, শহর সভাপতি মুর্শেদ আলি, আইএনটিইউসি-র সভাপতি মৃনাল বসু-সহ কয়েকজন নেতা। কিন্তু নির্বাচনী জনসভায় দেখা মেলেনি কংগ্রেসের নতুন জেলা সভাপতি এবং বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ইমাম হোসেনের। এমনকি সভা মঞ্চ থেকে কংগ্রেসের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন দলের মহকুমা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘সঞ্জয় অধিকারীকে আমরা সভাপতি হিসাবে মানি না।’’
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে,জেলা কংগ্রেসের অন্দরে যে চরম গন্ডগোল চলেছে তা সেদিনের সভার ছন্নছাড়া চেহারা থেকে স্পষ্ট। সভায় অনুপস্থিতি এবং গোষ্ঠীকোন্দল প্রসঙ্গে ইমাম হোসেন বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে পুরনো বিবাদ আছে কি না তা তো আমি বলতে পারব না। তাছাড়া সভার দিন আমি মনোনয়নের জন্য কাগজপত্র তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলাম তাই যেতে পারিনি।’’
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করে আইএনটিইউসি-র সভাপতি মৃনাল বসু বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। আমরা কংগ্রেস ছাড়া কাউকে ভোট দেব না। কিন্তু ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করার কোনও পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত নেই।’’