বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
বীরভূম জুড়ে সংগঠনকে মজবুত করতে বিজেপি উদ্যোগী হবে বলে দিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়, সামনের বছরের লোকসভা ও পরের বিধানসভাতেও যাতে দল শক্ত জমিতে দাঁড়াতে পারে তাই এই ব্যবস্থা। শনিবার সিউড়ির বীরভূম সাংগঠিনক জেলার বিশেষ সভায় এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
এ দিনের সভায় যোগ দিতে জেলা সদরে এসেছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সুনীল বনশল ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা ত্রিপুরার বিজেপি সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক। ছিলেন বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা, দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা, প্রাক্তন জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল-সহ জেলা নেতৃত্ব।
জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গরুপাচার মামলায় দিল্লিতে ইডির হেফাজতে আছেন। জেলায় দলের রাশ নিজের হাতেই রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় দল পরিচালনার জন্য কোর কমিটি গড়া হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় হয়েছে বিরোধীরা। গত দু’দিন রামপুরহাট, সিউড়ি ও বোলপুরে কর্মশালার আয়োজন করেছিল সিপিএম। হাজির ছিলেন দলের পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র ও রামচন্দ্র ডোম। এই আবহে এ দিন সিউড়িতে বিশেষ বৈঠকে আয়োজন করে বিজেপি।
বিজেপি সূত্রে খবর, এ দিনের সাংগঠনিক বৈঠকে বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন স্তরে সংগঠনকে মজবুত করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বীরভূমে বিজেপি শক্ত জমির উপর দাঁড়াতে পারে তা নিশ্চিত করতে বৈঠকে বার্তা দেওয়া হয়। জেলায় সংগঠনের নানা স্তরের মধ্যে যেখানে সমন্বয়ের সমস্যা হচ্ছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে দলীয় সংগঠনে রদবদলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, ‘‘সংগঠন যদি মজবুত থাকে, তা হলে সব নির্বাচনেই ভাল ফল করা সম্ভব। তাই নির্বাচনের কথা ভেবে নয়, সংগঠনের কথা ভেবেই এই বৈঠক। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর গাড়ির যেমন সার্বিক মেরামতির দরকার হয়, এটা তেমনই দলীয় স্তরে নির্দিষ্ট মেরামতির বৈঠক।’’ বৈঠকের আগে লকেট বলেন, “আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষকে পাশে নিয়ে বিজেপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের খুব ভাল ফল হবে।” পাশাপাশি, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ ও আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির গ্রেফতারির পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করেন লকেট।
যদিও তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এরকম বড় বড় কথা উনি বিধানসভা নির্বাচনের আগেও বলেছিলেন। তখনও অনুব্রতকে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তার পরেও সেবার যা ফল হয়েছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তেমনই ফল হবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’