Lockdown

পথে পুলিশ, মানুষ ঘরেই

রবিবার সকালে বাহিনী নিয়ে পুরুলিয়া শহরে টহল দিতে বেরিয়েছিলেন ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) আশিস রায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৬:৫২
Share:

জনহীন: কড়াকড়ির প্রথম দিন, রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে কড়াকড়ি। প্রথম দিন নিয়মকানুন বলবৎ করতে বিশেষ বেগ পেতে হল না পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পুলিশ-প্রশাসনকে। বিভিন্ন জায়গায় অনেক দোকানদারই সময় মতো ঝাঁপ ফেলে দিয়েছিলেন। প্রয়োজন ছাড়া খুব বেশি পথে বেরোতে দেখা যায়নি মানুষজনকেও।

Advertisement

রবিবার সকালে বাহিনী নিয়ে পুরুলিয়া শহরে টহল দিতে বেরিয়েছিলেন ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) আশিস রায়। চকবাজার ও মধ্যবাজার এলাকায় নিয়ম ভেঙে কিছু দোকান খোলা ছিল। বন্ধ করিয়ে রাস্তার উপরেই পুলিশ দোকানদারদের দশ বার করে ডন বৈঠক দেওয়ায়। ঝালদার বীরসা মোড়ে একটি সেলুন খোলার চেষ্টা হলে সিভিক ভলান্টিয়াররা ঠেকান। তবে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা বাদ দিয়ে গোটা জেলাতেই সকাল ১০টার পর থেকে দোকানপাট বন্ধ ছিল।

পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘সরকারি ঘোষণা বাসিন্দাদের আগাম জানানো হয়েছিল। তাতে সাড়া মিলেছে। মানুষজন সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন।” বস্তুত, শনিবার দুপুরের মধ্যে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় বাজারহাট সেরে নিয়েছিলেন অনেকে। এ দিন সকালে আনাজ বাজার, মাছ মাংসের দোকান বা মুদির দোকান খোলা থাকলেও ভিড় ছিল অনেক কম। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, অন্য দিন যা থাকে তার কুড়ি শতাংশও ভিড় হয়নি। ওষুধ আর মিষ্টির দোকান খোলা থাকলেও হাতে গোনা ক্রেতা দেখা গিয়েছে।

Advertisement

জেলার কুড়িটি ব্লক সদরেই সকাল থেকে টহল দিয়েছে পুলিশ। মানবাজারে আলাদা ভাবে বেরিয়েছিলেন এসডিপিও রাহুল পাণ্ডে ও সিআই সমীর সরকার। বান্দোয়ানে ছিলেন বিডিও কাসিফ সাবির। বিদ্যুত দফতরের পাশে একটি দোকান খোলা দেখতে পেয়ে সেটি বন্ধ করান তিনি। কুইলাপাল মোড়ে জটলা সরানো হয়। পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) পিনাকী দত্ত জানান, এ দিন মোট ১৫২ জনকে নিয়ম ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা, সতীঘাট-সহ বাজারগুলিতে নজরদারিতে নামেন জেলা পুলিশের কর্তারা। দশটার পরে বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দু’একটি দোকান যা খোলা ছিল, পুলিশ বন্ধ করিয়ে দেয়। বেলা ১১টার মধ্যেই শহরের রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে যায়।

তিনটি দলে ভাগ হয়ে বিষ্ণুপুর শহরে নজরদারি চালায় পুলিশ-প্রশাসন। একটি দলে ছিলেন মহকুমাশাসক অনুপকুমার দত্ত ও এসডিপিও কুতুবুদ্দিন খান। আর একটি দলে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গনেশ বিশ্বাস। তৃতীয় দলে বিষ্ণুপুরের আইসি শান্তনু মুখোপাধ্যায়। হিরা মার্কেটের একটি পোশাকের দোকানের শাটার নিজের হাতে নামিয়ে দেন এসডিপিও। সতর্ক করা হয় রাস্তার ফল বিক্রেতাকে। এক অঙ্কনশিল্পী বাড়ির সামনে বসে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছিলেন। তাঁকেও ভিতরে পাঠান মহকুমাশাসক। এর পরে নিয়ম ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল সোনামুখী, পাত্রসায়র ও ইন্দাসের বাজার গুলিতেও।

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ খাতড়া শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন এসডিপিও (খাতড়া) কাশীনাথ মিস্ত্রি। নির্দিষ্ট সময়ের পরে দোকান বন্ধ করতে পথে নেমেছিল রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা, সিমলাপাল থানার পুলিশ। এসডিপিও জানান, নিয়ম ভাঙায় এ দিন ১৫ জনকে আটক করা হয়েছিল। শর্তসাপেক্ষে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইঁদপুর, বাংলা, ভেদুয়াশোল, ডাঙারামপুর-সহ বিভিন্ন বাজারে ও মোড়ে জটলা দেখলেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement