মল্লারপুরের ঘোষগ্রামে জবা ফুলের চাষ। নিজস্ব চিত্র
জবা ফুল মহা অর্ঘ্য রূপে নিবেদিত হয় তারাপীঠে। কৌশিকী অমাবস্যার সময় লক্ষ লক্ষ ভক্তের পুজোতে লক্ষাধিক জবা ফুলের প্রয়োজন পড়ে। দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে প্রায় পাঁচ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হতে পারে বলে আন্দাজ প্রশাসনের। তাই আগামী শনিবার, কৌশিকী অমাবস্যার দিন জবাফুলের জোগানে যাতে ঘাটতি না পড়ে সে জন্য অধিকাংশ ফুল চাষি এবং ফুল ব্যবসায়ীরা তাঁদের নিজেদের বাড়ি, আত্মীয়স্বজন বা আশপাশের বাড়ির ফ্রিজে জবা ফুল মজুত করার তোড়জোড় শুরু করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর তারাপীঠের আশপাশের গ্রাম কড়কড়িয়া, দেখুড়িয়া, বিলাসপুর, উদয়পুর, বড়শাল, গোপালপুর, খরুণ, স্বর্গপুর, মহেশপুর, ঘোষগ্রাম, রামভদ্রপুর, সন্ধিগড়া বাজার এলাকায় জবা ফুলের উৎপাদন ভাল হয়েছে। চাষিদের আশা, সে জন্য স্থানীয় এলাকার ফুল চাষিরাই কৌশিকী অমাবস্যায় জবা ফুলের চাহিদা মিটিয়ে দিতে পারবেন। বীরভূম লাগোয়া মুর্শিদাবাদ জেলার শীতলগ্রাম এলাকার জবা ফুলের চাষিরাও তারাপীঠে জবা ফুলের জোগান দেন।
ফুলচাষিরা জানান, বর্তমানে স্থানীয় চাষিরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় দু’লক্ষাধিক জবা ফুল তারাপীঠে জোগান দেন। সে জন্য ফুল ব্যবসায়ীরাও হাওড়ার ফুলের হাট থেকে জবা ফুল এখন কম আমদানি করেন। জবা ফুল চাষি নিখিল হাজরা জানান, এ বছর মাত্র ৫০ হাজার জবা ফুল হাওড়া থেকে আমদানি করার কথা। তারাপীঠের অন্য ফুল ব্যবসায়ীদেরও দাবি, এ বছর কৌশিকী অমাবস্যায় স্থানীয় ফুল চাষিরাই অধিকাংশ জবা ফুলের চাহিদা মেটাতে পারবেন।
তারাপীঠের ফুল ব্যবসায়ী মল্লারপুর থানার ঘোষগ্রামের ফুলচাষি মিলন মণ্ডল, সমীর লেট জানান, এখন বিঘে প্রতি দৈনিক গড়ে প্রায় এক হাজার জবা ফুল পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার কৌশিকী অমাবস্যার আগে মঙ্গলবার থেকেই ফুল চাষিদের অনেকেই তাদের বাড়ি বা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে এবং আশপাশের লোকজনের বাড়িতে ফ্রিজে জবা ফুল রাখতে শুরু করবেন।
সন্ধিগড়া বাজারের নিখিল হাজরা জানান, শনিবার কৌশিকী অমাবস্যার দিন থেকে ফ্রিজে রাখা জবা ফুল চাষি এবং ফুল ব্যবসায়ীরা তারাপীঠে জোগান দিতে শুরু করবেন।
অন্য দিন ১০ টাকা দামের জবা ফুলের মালা বেশি চাহিদা থাকলেও কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে ১০৮ জবা ফুলের মালার চাহিদা বেশি থাকে। ফুল ব্যবসায়ীরা জানান কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে ১০৮ জবা ফুলের মালা ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দামে বিক্রি হয়।
তারাপীঠ এলাকার ফুল চাষি এবং ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, দু’বছর করোনার কারণে কৌশিকী অমাবস্যার সময় দর্শনার্থীদের সমাগম না ঘটায় আর্থিক দিক থেকে তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এ বছর কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখবেন বলে আশাবাদী জবা ফুলের চাষি এবং ফুল ব্যবসায়ীরা।