দাবি: পৌষমেলার দাবিতে মিছিল বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র।
চলতি বছরে পৌষমেলার দাবিতে রবিবার শান্তিনিকেতনের কবিগুরু হস্তশিল্প বাজার থেকে উপাসনা গৃহ পর্যন্ত পদযাত্রা করলেন স্থানীয় হস্তশিল্প ব্যবসায়ী ও লোকশিল্পীরা। বিশ্বভারতীর একাধিক পড়ুয়া ও অধ্যাপকও এ দিনের মিছিলে যোগ দেন। মিছিলে যোগদানকারীদের হাতে থাকা ব্যানারে পৌষমেলা করার দাবির পাশাপাশি ২০১৯ সালের পৌষমেলায় বাকি থাকা ‘সিকিউরিটি মানি’ ফেরত এবং উপাচার্যের পদত্যাগেরও দাবিও জানানো হয়। ৭ পৌষ আসতে বাকি আর মাত্র ১০ দিন। পৌষমেলার মাঠে অন্য বছরের তোড়জোড়ের ছবিটা এবার সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, এই বছর পৌষমেলা আয়োজনের কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। একাধিকবার একাধিক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠনের তরফে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পরেও চলতি বছরে পৌষমেলা আয়োজনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি কর্তৃপক্ষ। এবার তাই পথে নেমে বিক্ষোভের রাস্তায় হাঁটলেন হস্তশিল্পী ও লোকশিল্পীরা।
একই সময়ে এবার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে পৌষমেলা আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। এ দিন বাউল গান গাইতে গাইতে মিছিলটি হস্তশিল্প বাজার থেকে উপাসনা মন্দির পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে আসে। মিছিল থেকে শিল্পীরা দাবি তোলেন, পৌষমেলা বন্ধ করে শান্তিনিকেতনের ক্ষুদ্রশিল্পীদের রোজগারের সংস্থান নষ্ট করতে চাইছে বর্তমান বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, কিন্তু রবীন্দ্র ঐতিহ্য তথা শান্তিনিকেতনের হস্তশিল্প ও লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে পৌষমেলা আয়োজন করতেই হবে। স্থানীয় বাউল অষ্টম দাস বাউল বলেন, “গত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পৌষমেলায় আসি, গানবাজনা করি। অনেক পর্যটক আসেন, তাই আমাদেরও অনেকটাই বেশি রোজগার হয়, অনেক মানুষকে গানও শোনাতে পারি। পৌষমেলা বন্ধ হয়ে গেলে আমরা কোথায় যাব?’’
মিছিলের অন্যতম আয়োজক তথা কবিগুরু হস্তশিল্প উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা বলেন, “উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আর্থিক অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বহু শিল্পী ও তাঁদের পরিবার। বিগত মেলার টাকাও এখনও অনেকেই ফেরত পাননি। গুরুদেব চেয়েছিলেন পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় শিল্পীদের প্রতিভা বিকশিত হোক, তাই আমরাও চাই শিল্পীদের প্রতিভা বিকাশের এই মঞ্চ যেন কেড়ে নেওয়া না হয়।” তবে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।