টানা লোডশেডিং-এ নাকাল বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ক্ষোভে দিনভর দফায় দফায় অবরুদ্ধ হল বাঁকুড়ার সিমলাপালের পথ। শনিবার রাত থেকেই এই ব্লকে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। রবিবার সারা দিন গোটা ব্লকেই বিদ্যুৎ ছিল না। সোমবারও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রইল ব্লকের বহু গ্রাম। এরই প্রতিবাদে সিমলাপালের লক্ষ্মীসাগর, পুখুরিয়া মোড়, কুলডোবার মতো এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথ অবরোধে নামেন বিক্ষুব্ধ মানুষজন। অবরোধের জেরে যানজট সৃষ্টি হয় ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া রাজ্য সড়কে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, শনিবার বিকেলে ঝড়বৃষ্টির পর থেকেই সিমলাপাল ব্লক সদর-সহ গ্রামগুলি লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে। রবিবার সকালে সিমলাপাল-খাতড়া রাস্তার লক্ষ্মীসাগর এলাকায় পথ অবরোধে নামেন স্থানীয় লোকজন। বেশ কয়েক ঘণ্টা অবরোধ হয়। দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করার আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তোলা হলেও দিনভর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল সিমলাপাল ব্লক। রাতের দিকে সিমলাপাল-সহ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হলেও সোমবার সারা দিন দফায় দফায় লোডশেডিং হয়েছে। লক্ষ্মীসাগর ও পুখুরিয়ায় এ দিন সকাল ন’টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন গ্রাহকেরা। লক্ষ্মীসাগর বাজারে মেরামতির কাজ করতে গিয়ে গ্রাহকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিদ্যুৎ কর্মীরা। বিকেলে বিদ্যুৎ দফতরের সিমলাপাল সাব-স্টেশনেক ম্যানেজার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। একই ভাবে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাস্তায় কুলডোবাতেও বিদ্যুতের দাবিতে ঘণ্টাখানেক পথ অবরোধে নামেন স্থানীয় লোকজন। টানা প্রায় দু’দিনের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে গোটা ব্লক জুড়েই। সিমলাপালের বাসিন্দা লখিন্দর সিংহ মহাপাত্রের ক্ষোভ, “গরমে হাসফাঁস অবস্থা। বাড়িতে জল নেই। অন্ধকারে ডুবে গোটা এলাকা। টানা দু’দিন এ ভাবে কাটাতে হল।’’ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার জেলা সম্পাদক স্বপন নাগ বলেন, “বিদ্যুৎ দফতরের গড়িমসিতেই টানা দু’দিন ধরে বিদ্যুৎ পেলেন না গ্রাহকেরা। সাধারণ মানুষ আন্দোলনে না নামলে পরিষেবা ঠিক হতে আরও সময় লাগত।’’
এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ কী? জেলা বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার চন্দ্রশেখর সেনগুপ্ত বলেন, “সিমলাপালে বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুতের তারের উপরে বাজ পড়েছে। এ ছাড়াও জলীয় বাষ্প স্যুইচ গিয়ারে ঢুকে যাওয়ায় বিপত্তি বেড়েছে। যা সারতে সময় লেগেছে। তবে, রবিবার রাত থেকেই আমরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সারানোর কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু কিছু জায়গায় গ্রাহকদের বিক্ষোভ ও ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়ে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে।’’ সোমবার বিকেল পর্যন্ত ব্লকের বহু গ্রামেই বিদ্যুৎ সংযোগ করা যায়নি মেনে নিয়ে দ্রুত ওই সব গ্রামে পরিষেবা সচল করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।