—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই দু’জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকের আগেও হাতি উপদ্রুত এলাকা নিয়ে সতর্ক বন দফতর, শিক্ষা দফতর, পুলিশ ও প্রশাসন। জানানো হয়েছে, হাতিদের উপরে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি জঙ্গল এলাকার পড়ুয়াদের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে রাখা হচ্ছে গাড়ির ব্যবস্থা।
বন দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগে রয়েছে ৫৩টি হাতি। বিষ্ণুপুরের পাঞ্চেত বন বিভাগের বাঁকাদহ রেঞ্জে রয়েছে রয়েছে ১৫টি হাতি। তার মধ্যে বড়জোড়া রেঞ্জে বড়জোড়ায় ৯টি, দক্ষিণ সরাগড়ায় ৫টি, মাছমুড়ায় ১টি, বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জোড়শালে ২টি, লাদুনিয়ায় ৪টি, সাতখুলিয়ায় ১টি, আমলাতোড়ে ১টি, গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জের কাল্লাপুরে ১টি, পাত্রসায়র রেঞ্জের সাতগাছিয়ায় ৬টি, সোনামুখী রেঞ্জের করঞ্চমনি খয়রাসোলে ২৩টি হাতি রয়েছে। হাতিদের সঠিক অবস্থান জানতে এ দিন দু’টি বন বিভাগেই দিনভর বিশেষ পরিদর্শন চলে।
বন দফতর রাতে হাতিদের অবস্থান দেখতে বিশেষ দল রাখা হয়েছে। সকাল থেকেও বিশেষ এলিফ্যান্ট স্কোয়াড হাতিদের উপরে নজর রাখবে।
ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগ) উমর ইমাম বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সারা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। কারণ সবার আলাদা আলাদা বিষয় থাকে।’’
তিনি জানান, বেলিয়াতোড়ের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের পরীক্ষার্থীদের জন্য পুলিশের তরফে থাকছে ১৭টি গাড়ি।বন দফতরের তরফে থাকবে ১৩টি গাড়ি। এছাড়াও গঙ্গাজলঘাটি, বাঁকুড়া ২, সোনামুখী ও রাধানগরে পরীক্ষার্থীদের জন্য গাড়ি থাকবে। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের রাস্তায় হুলাপার্টি ও বিশেষ নজরদারি দল থাকবে। বনদফতরের আধিকারিকেরাও বিভিন্ন জায়গায় থাকবেন।
ডিএফও (বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত) অঞ্জন বসু বলেন, ‘‘হাতি উপদ্রুত ন'টি পয়েন্টে পরীক্ষার্থীদের জন্য গাড়ি থাকবে। এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের লোকেরা হাতিদের নজরদারিতে থাকবেন। সব পয়েন্টে এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের গাড়ি ও নজরদারি দল থাকবে। বন দফতরের আধিকারিকেরাও পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের রাস্তায় থাকবেন।
ডিএফও (পুরুলিয়া) এম কার্তিকেয়ন বলেন, ‘‘বাঘমুণ্ডির মাঠা বনাঞ্চলে ১২টি হাতি, ঝালদা বনাঞ্চলের কলমা এলাকার সীমানার ও পারে ঝাড়খণ্ডে ২৫-৩০টি হাতি রয়েছে।’’ বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যে কোনও সময় দলটি এ পারে চলে আসতে পারে। আশ্বস্ত করে ডিএফও জানান, বনকর্মীদের নজরদারি রয়েছে। মাধ্যমিকের মতোই একই রকম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
বান্দোয়ানের আসনপানিকেও সীমানার ওপারে আটটি হাতির একটি দল রয়েছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, ঘন কুয়াশার মধ্যে ভোরে হাতিরা এ দিকে চলে এলে বিপত্তি বাড়তে পারে। কারণ সকালেই পরীক্ষার্থীদের বেরোতে হবে।
ডিএফও (কংসাবতী দক্ষিণ) অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের গ্রাম থেকে গাড়িতে তুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে আসা ও ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বনকর্মী ও হুলাপার্টির সদস্যেরাও নজরদারি চালাবেন।’’
পুরুলিয়া জেলা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সত্যকিঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘হাতি উপদ্রুত এলাকার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে যাতে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়, সেই বিষয়টি মাথায় রেখে বন দফতর ও প্রশাসনের যৌথ বৈঠকে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’