নবান্নে যোগ দিতে বাপের বাড়ি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তিন জনের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন পূর্ণিমা পাল (৩৩), তাঁর ছেলে সৌম্যদীপ পাল (৮) ও পূর্ণিমাদেবীর পিসতুতো ভাই অখিল মণ্ডল (২৮)। পূর্ণিমাদেবী গুরুপল্লি এলাকার বাসিন্দা এবং অখিল ময়ুরেশ্বর থানার নবগ্রামের বাসিন্দা। আহতদের সকলকেই প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজ, শনিবার মৃতদের ময়না-তদন্ত হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিনিকেতন থানার কঙ্কালিতলার কাছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের মাজিয়ারা গ্রামের বাচ্চু মণ্ডল পিসতুতো ভাই অখিলকে নিয়ে দু’টি মোটরবাইকে বোলপুরে দিদির বাড়িতে আসেন। সন্ধ্যায় ভাগ্নি সৌদিপাকে নিয়ে একটি মোটরবাইকে ওঠেন বাচ্চু অন্য মোটরবাইকে দিদি পূর্ণিমা, ভাগ্নে সৌম্যদীপকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন অখিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কঙ্কালিতলা মন্দির পেরিয়ে রাস্তার একটি বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারায় অখিলের গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সৌম্যদীপের।
কঙ্কালিতলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ অহিউদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত গাড়ি করে বাকিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার কিছু সময়ের মধ্যে মারা যান অখিল। তার কিছু পরে মৃত্যু হয় পূর্ণিমাদেবীরও। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আহতদের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মাথায় গুরুতর চোট এবং অত্যধিক রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। অখিলের ভাই সাগর সরকার জানান, চেন্নাইয়ের একটি কারখানার কর্মী ছিলেন অখিল। ছুটিতে ময়ূরেশ্বরের নবগ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। রবিবার মামার বাড়ি মাজিয়ারাতে ছিল নবান্ন উৎসব। অনুষ্ঠানের আগে এমন দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে। চোখের সামনে দুর্ঘটনায় পরিবারের তিন জনকে হারিয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ বাচ্চু এবং তাঁর ভাগ্নি সৌদিপা। তাঁদের আক্ষেপ, ‘‘চোখের সামনে এমন দুর্ঘটনা ঘটল। কিন্তু, কিছুই করতে পারলাম না!’’