লাভপুরে "জল স্বপ্ন", তৈরি হচ্ছে জলের ট্যাঙ্কার
হাতে রয়েছে আর মাত্র এগারো মাস। অথচ লাভপুর ব্লকের ৬০ শতাংশ বাড়িতে জলজীবন মিশন’ তথা ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পে এখনও পানীয় জল পৌঁছয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাড়িতে বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি একটি প্রশাসনিক বৈঠকে কাজের গতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ (রানা) সিংহ। জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ অবশ্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে জলজীবন মিশন প্রকল্পে জনস্বাস্থ্য কারিগরি (পিএইচই) বিভাগের তত্ত্বাবধানে নিখরচায় বাড়ি বাড়ি পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। দু’ভাবে ওই প্রকল্প রূপায়ণের কাজ চলছে। প্রথমটি একটি বা দু’টি গ্রামের সর্বোচ্চ ১০০টি পরিবারের জন্য অপেক্ষাকৃত ছোট জলাধার থেকে জল সরবরাহ। অন্যটি একত্রে অনেকগুলি গ্রামের জন্য বড় জলাধার থেকে জল সরবরাহ। মুখ্যমন্ত্রী চলতি বছরের মধ্যে ওই প্রকল্পে প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন।
কিন্তু লাভপুরে কাজের গতি আশানুরূপ নয় বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুর ব্লকের প্রায় ৭৬ হাজার পরিবারে জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৯টি বড় এবং ৩০টি ছোট জলাধার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৫টি বড় জলাধার নির্মাণের কাজ চলছে। ১৪টি জলাধারের কাজে হাতই পড়েনি। ৩০টি ছোট জলাধারের মধ্যে ২৭টির কাজ চলছে অথবা সম্পূর্ণ হয়েছে। মাত্র ৪০ শতাংশ বাড়িতে জল পৌঁঠেছে। এর ফলে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কেমপুরের আশালতা মণ্ডল, উজ্বলপুরের সাগর বাগদিরা বলেন, ‘‘এখনও আমাদের বাড়িতে পাইপলাইনই হয়নি। জল কবে পৌঁছবে তার ঠিক নেই।’’
একই সংশয় প্রশাসনেরও। সম্প্রতি ব্লক অফিসে কাজের পর্যালোচনা বৈঠক হয়। সেখানে বিধায়ক অসন্তোষ প্রকাশ করেন কাজের ‘শ্লথ’ গতি নিয়ে। বিধায়ক বলেন, ‘‘জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজের গতি মোটেই সন্তোষজনক নয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য আমরা প্রতি মাসে পর্যালোচনা বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বিডিও (লাভপুর) শিশুতোষ প্রামাণিক জানিয়েছেন, ৩১ মার্চের মধ্যে ছোট জলাধারের কাজ সম্পূর্ণ করে হস্তান্তরের পাশাপশি বড় জলাধার নির্মাণের কাজে গতি আনতে বলা হয়েছে পিএইচই-কে।
এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (পিএইচই) দেশবন্ধু হাজরা বলেন, ‘‘ওই এলাকা পাথুরে। জলস্তরও অনেক নীচে। সেই জন্য পাম্পের পাইপের বোরিং করতে অনেক সময় লাগছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়া হবে।’’