নিজের বাড়িতে লালন শেখের স্ত্রী রেশমা। সোমবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
তিনি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা সত্যি প্রমাণিত হল বলে মনে করছেন রেশমা বিবি। সিবিআই হেফাজতে বগটুই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চার আধিকারিকের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনায় এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন রেশমা। তাঁর দাবি, ‘‘আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। দোষীদের চরম সাজা চাই।’’
বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায়, নিজের শ্বশুরবাড়িতে সোমবার ভাত রান্না করছিলেন রেশমা বিবি। দুপুর বারোটার পরে টিভিতে খবর দেখেই ছুটে আসে মেয়ে রুপসা খাতুন। মাকে জানায়, তার বাবার মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআইয়ের চার আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। খবরটা জেনেই ছিটকে ওঠেন রেশমা। ধীরে ধীরে খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় লালন শেখের পুরনো বাড়িতে একে একে আত্মীয়-পরিজনের ভিড় বাড়তে থাকে।
ঘটনাচক্রে আজ, মঙ্গলবার পরিবারের পক্ষ থেকে লালনের মৃত্যুতে মিলাদ-এর আয়োজন করেছে। ঠিক তার আগের দিন সিবিআইয়ের চার জনের সাসপেন্ড হওয়ার খবরে খুশি গোটা পরিবার।
গত ১২ ডিসেম্বর রামপুরহাটের মাঝখণ্ড মোড় লাগোয়া সরকারি অতিথিশালায় সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচাগারে লালনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই দিনই গভীর রাতে রামপুরহাট থানায় সিবিআইয়ের সাত জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি, হুমকির অভিযোগে এফআইআর করকেন রেশমা বিবি। সেই সব অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর বা সিআইডি।
এ দিন দুপুরে পূর্বপাড়ায় লালনের পুরনো বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, লালনের মেয়ে, একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রুপসা মোবাইলে বারবার সাসপেন্ড হওয়ার খবর আত্মীয়দের দেখাচ্ছে। পাশেই ছিলেন রেশমা। তাঁর দাবি, ‘‘সিবিআই আধিকারিকদের হাতেপায়ে পড়ে বলেছিলাম, আমার স্বামী নির্দোষ। আমার কথা ওঁরা কানে না দিয়ে যথেচ্ছ মারধর (লালনকে) করেছিলেন। আমার স্বামীকে সিবিআই খুন করেছে। আমার অভিযোগ যে সত্যি, তা এ দিন প্রমাণ হল।’’রেশমার সংযোজন, ‘‘আমরা (সাসপেনশনে) খুশি। সিআইডি যে-ভাবে তদন্ত করছে তাতেও আমরা খুশি। দোষীদের চরম সাজা চাই, আর কিছু না।’’
লালনের দিদি বলেন, ‘‘তিন বোনের পরে লালন ছিল আমাদের বড় আহ্লাদের ভাই। ভাইয়ের মৃত্যুর পরে মিলাদ মঙ্গলবার হবে। তার আগে সিবিআই আধিকারিকেরা সাসপেন্ড হওয়ায় আমরা খুশি।’’