কর্মশ্রী প্রকল্পে দুই জেলায় কাজ দিতে তৎপরতা প্রশাসনে
Karmashree Project Bankura

প্রচুর কর্মদিবস, তবু কাজ নেই সবার

লোকসভা নির্বাচনের মুখে ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প চালু করে একশো দিনের কাজের শ্রমিক তথা জবকার্ডধারীদের কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

‘কর্মশ্রী’ প্রকল্পে মাসখানেকের মধ্যেই ভাল সংখ্যায় কর্মদিবস তৈরি করে নজর কেড়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। তবে জেলার সমস্ত এলাকার শ্রমিকেরা ওই প্রকল্পে কাজ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনের মুখে ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প চালু করে একশো দিনের কাজের শ্রমিক তথা জবকার্ডধারীদের কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৬ জুন লোকসভা ভোটের আদর্শ আচরণবিধি ওঠার পরে ওই প্রকল্পে কাজ দেওয়া শুরু হয় জেলায়। ন্যূনতম ৫০ দিন কাজ পাওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের তথ্যে দাবি, কর্মশ্রী প্রকল্পে ইতিমধ্যে জেলায় প্রায় ৪,৯৯১টি সরকারি প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার জনকে কাজ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫৫ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করে জবকার্ড পিছু প্রায় ৪৩ দিন কাজ দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি বাবদ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। জেলাশাসক সিয়াদ এন বলেন, “কর্মশ্রী প্রকল্পে জেলায় ব্যাপক হারে কাজ চলছে। প্রতি সরকারি প্রকল্পেই জবকার্ডধারী শ্রমিকেরা কাজ পাচ্ছেন। প্রতিটি দফতরের সঙ্গে সংযোগ রেখে কাজ দেওয়া হচ্ছে।”

প্রশাসনিক তথ্যে কাজের গতি থাকলেও জেলার নানা জায়গায় কান পাতলে অন্য কিছুই শোনা যাচ্ছে। ইঁদপুরের হিরাশোল গ্রামের প্রবীর বাউরি, শৈলেন বাউরি, লক্ষ্মীকান্ত বাউরিদের দাবি, “বৃষ্টির অভাবে চাষ ভাল না হওয়ায় দিনমজুরির কাজ নেই। একশো দিনের কাজও নেই। এক প্রকার বেকার বসে রয়েছি। প্রায়ই পঞ্চায়েতে যাই কাজের খোঁজে। কিন্তু কাজ পাইনি।” কেন এই অবস্থা? প্রশাসনিক মহলের একাংশের দাবি, ‘কর্মশ্রী’তে কাজ নির্ভর করে বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রকল্পের উপরে। প্রতি দফতরে যে এলাকায় যেমন কাজের বরাত মেলে, দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার শ্রমিকেরা তেমনই কাজ পাবেন। অর্থাৎ, এলাকায় সরকারি নির্মাণকাজ হলেই স্থানীয় শ্রমিকেরা কাজ পাবেন।

Advertisement

আর সমস্যা এখানেই। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কর্মশ্রী প্রকল্পকে একশো দিনের কাজের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরছেন। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। তা করতে গেলে রাজ্য সরকারকে কেবল কর্মশ্রী প্রকল্পের জন্য আলাদা বাজেট করে বিভিন্ন এলাকায় একশো দিনের প্রকল্পের মতো কাজ দিতে হবে।” তাঁর সংযোজন, “কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্কীর্ণ রাজনীতির বলি হচ্ছেন শ্রমিকেরা। অবিলম্বে ওই প্রকল্প চালু করতে পদক্ষেপ দরকার।” একশো দিনের কাজ বন্ধের জন্য রাজ্য সরকারের দুর্নীতিকে দায়ী করে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের অভিযোগ, ওই প্রকল্পের বিকল্প কিছু হতে পারে না। শ্রমিকদের স্বার্থে কেন্দ্রকে কাজের ঠিক হিসেব পেশ করুক রাজ্য সরকার।

বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর তবে দাবি, “রাজনৈতিক অভিসন্ধি করে কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজ বন্ধ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ওই প্রকল্পে বকেয়া শ্রমিকদের মজুরি দিয়েছেন। কর্মশ্রী প্রকল্পে শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থাও করেছেন।
জেলার সর্বস্তরের শ্রমিকেরাই কাজের সুযোগ পাবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement