দুর্ঘটনায় মৃত এক দিনমজুরের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে পথ অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
রবিবার সকালে রামনগর-কোটাসুর সড়কে ময়ূরেশ্বরের ছোটডিবুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অনাদি ভল্লা (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়ূরেশ্বরেরই পলশা গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে মোটরবাইকে চেপে নবান্নের মিষ্টি কিনতে ষাটপলশা বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন অনাদিবাবু। সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসছিল একটি ট্রাক। ছোটডিবুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে তখন দাঁড় করানো ছিল একটি ধান বোঝাই ট্রাক্টর, ট্রাক্টরের লাঙল, ‘ক্যাজুয়েল’ (ট্র্যাক্টরের মাটি ছাড়ানোর লোহার চাকা) প্রভৃতি। ট্রাকের হেডলাইটের তীব্র আলোয় তিনি ওই সব দেখতে না পেয়ে মাঝে গিয়ে বেসামাল হয়ে পড়েন। সেই সময় ট্রাকটি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অনাদিবাবুকে ভর্তি করানো হয় সিউড়ি সদর হাসপাতালে। রাত ১টা নাগাদ সেখানেই তাঁর মৃত্যূ হয়।
সে খবর গ্রামে এসে পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে দুর্ঘটনাস্থলেই রামনগর-কোটাসুর সড়ক অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশও বিক্ষোভের মুখে পড়ে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, রাস্তার দুই দিক অবরোধ করে ট্রাক্টর, যন্ত্রচালিত ভ্যান-সহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকে। তাই যানবাহন চলাচলের সময় পথচারীদের প্রাণ হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয়। অথচ প্রশাসনের কোনও নজর নেই। প্রশাসন এ ব্যাপারে সময়ে সজাগ হলে ওই দিনমজুরকে এ ভাবে প্রাণ দিতে হতো না। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এখন কে দেখবে ওঁর সংসার?’’
অনাদিবাবুর ভাইপো প্রসেনজিৎ ভল্লা জানান, এ দিনই তাঁদের নবান্ন ছিল। সেই উপলক্ষে তাঁর জেঠু দোকান থেকে মিষ্টি কিনতে যাচ্ছিলেন। সেই যাওয়াইটাই কাল হল। এ দিকে, এ দিনের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জটিল মণ্ডল এবং সংশ্লিষ্ট ষাটপলশা পঞ্চায়েতের প্রধান নন্দদুলাল দাস। তাঁদের হস্তক্ষেপে ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে। পরে প্রধান বলেন, ‘‘এর আগে কেউ যানবাহনের রাস্তা অবরোধ করে থাকা নিয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করেননি। তবে, এ বার থেকে কড়া হাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।