গণরোষ: পুলিশের সামনে বাঁশ উঁচিয়ে গ্রামবাসীরা। শনিবার লাভপুরের ফিংতোড়ে। ছবি: কল্যাণ আচার্য
বাড়ি তৈরির অনুদান, ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে নেওয়া ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে উত্তেজনা ছড়াল লাভপুরের জামনা পঞ্চায়েতের ফিংতোড় গ্রামে। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুিলশ পৌঁছলে তাড়া করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। জনতাকে হঠাতে পুলিশ শূন্যে বন্দুক উঁচিয়ে ধরে বলেও অভিযোগ।
পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য রুমা বাগদি, তৃণমূলের গ্রাম কমিটির সদস্য তথা ১০০ দিন প্রকল্পের সুপারভাইজার দেবীশঙ্কর চক্রবর্তী সহ শাসক দলের চার কর্মীর কাছে কাটমানি ফেরতের দাবি জানান এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শনিবার ওই নেতাদের কাটমানি ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় স্কুলমাঠে হাজির হন গ্রামবাসীরা। কিন্তু অভিযুক্তেরা কেউ আসেননি। এতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা লাঠি, বাঁশ নিয়ে অভিযুক্তদের খোঁজে তাঁদের বাড়ির দিকে এগোতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিযুক্তদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। তা নিয়ে গ্রামবাসীরা পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, এক সময় পুলিশকে তাড়া করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। পুলিশও পাল্টা লাঠি উচিয়ে তেড়ে যায়। অভিযোগ, জনতাকে সরাতে এক সময় পুলিশ শূন্যে বন্দুকও তোলে। তবে পুলিশের তরফে তা মানা হয়নি। এ দিন রাত পর্যন্ত গ্রামে উত্তেজনা কমেনি।
তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিজেপি ওই গ্রামে অশান্তি সৃষ্টি করছে। গ্রামবাসীদের কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের দরজা খোলা আছে। কিন্তু গ্রামে অশান্তি সৃষ্টি করা রাজনৈতিক ফিকির ছাড়া কিছু নয়।’’
বিজেপির স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতারিত মানুষদের প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমরা কোথাও অশান্তি সৃষ্টি করছি না। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভের শিকার হচ্ছেন তৃণমূলের দুনীতিগ্রস্থ লোকেরা।’’ পুলিশ জানায়, গ্রামবাসীদের ক্ষোভের হাত থেকে এক জনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।