Ajit Mahato Grand Rally

জাতীয়বৃত্তে জাতিসত্তার আন্দোলন

সংগঠন সূত্রের খবর, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরুলিয়ার ছড়রায় তিন দিনের এই বিশেষ অধিবেশন ‘ঐতিহাসিক কুড়মালি জিআউ জুড়ুআহির’ ডাক দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

প্রশান্ত পাল 

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:০৩
Share:

দিল্লির বৈঠকে। —ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন রাজ্যে নিজ নিজ জাতিসত্তার দাবিতে আন্দোলনকারী নানা সংগঠনগুলিকে এক সুতোয় বাঁধতে চাইছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। নিজেদের দাবিদাওয়ার পক্ষে সওয়াল জোরদার করতে সংগঠনগুলিকে নিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে মার্চ মাসে পুরুলিয়ায় বড় সমাবেশ করতে চলেছে তারা। একই সঙ্গে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলির কাছে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনও করাও তাদের লক্ষ্য। এই অধিবেশনের রণকৌশল তৈরি করতে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিত মাহাতো।

Advertisement

সংগঠন সূত্রের খবর, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরুলিয়ার ছড়রায় তিন দিনের এই বিশেষ অধিবেশন ‘ঐতিহাসিক কুড়মালি জিআউ জুড়ুআহির’ ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রথম দু’দিনের অধিবেশন হবে রুদ্ধদ্বার। কুড়মালি ভাষায় যাকে ‘সবরিয়া’ বলা হচ্ছে। শেষ দিনের প্রকাশ্য সমাবেশের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঘারুয়া’।

দিল্লিতে ঝাড়খণ্ডের গিরিডির আজসুর সাংসদ চন্দ্রপ্রকাশ চৌধুরীর বাসভবনে ওই বৈঠক করেন অজিত। ছিলেন জামশেদপুরের বিজেপি সাংসদ বিদ্যুৎবরণ মাহাতো, বিহারের জেডিইউ-র রাজ্যসভার সাংসদ খীরু মাহাতো, ওড়িশার বিজেডি-র রাজ্যসভার সাংসদ মমতা মহন্ত। অজিতের সঙ্গে বৈঠকে আয়োজক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের দুই সদস্য সাধনচন্দ্র মাহাতো ও অশোক মাহাতো এবং ঝাড়খণ্ডের যুব সংগঠনের আহ্বায়ক অরবিন্দ মাহাতো ও কুড়মি সমম্বয় কমিটির ঝাড়খণ্ডের নেতা লালচাঁদ মাহাতো প্রমুখ হাজির ছিলেন।

Advertisement

অজিত বলেন, ‘‘এই আন্দোলনকে আমরা দেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক আন্দোলনের রূপ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছি। কুড়মি ছাড়াও আরও কয়েকটি সম্প্রদায় জাতিসত্তার দাবিতে আন্দোলন করছে। আমরা মনে করি এই আন্দোলনে তাঁদেরও শামিল করা উচিত। অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার সেই সব সংগঠনকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। ওই রাজ্যগুলির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বর্তমান ও প্রাক্তন বিধায়ক এবং সাংসদদের ঐতিহাসিক জুড়ুআহিতে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। যাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নেই, কিন্তু বিধানসভায় তাঁদের প্রতিনিধি রয়েছে, তাঁদেরও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, অধিবেশনে কমবেশি পাঁচ হাজার প্রতিনিধি থাকবেন। প্রকাশ্যে সমাবেশে কয়েক লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে।

অজিত জানান, দেশে শেষবার জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়েছিল ১৯৩১ সালে। তবে সংসদে লালুপ্রসাদ যাদব বা নীতিশ কুমার আগে এই দাবি তুলেছেন। এখন রাহুল গান্ধীও এই দাবি তুলেছেন। তাঁরা রাহুলের এই দাবিকে অবশ্যই সমর্থন করেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অজিত বলেন, ‘‘কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী তিনবার আমাদের দাবির বিষয়টি সংসদে তুলেছেন। তাই তাঁকেও আমন্ত্রণ জানানোর ভাবনা রয়েছে।’’

উল্লেখ্য, কুড়মি সম্প্রদায়ের জাতিসত্তার দাবির প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তৃণমূলের বক্তব্য, বল এখন কেন্দ্রের কোর্টে। তাই কি লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বিভিন্ন দলকে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ হিসেবে এই অধিবেশনের আয়োজন? অজিত বলছেন, ‘‘আমাদের আন্দোলনের আগামী দিনের রূপরেখা কী হবে তা ঠিক করতেই ওই অধিবেশন। পাশাপাশি যদি কোনও দল আমাদের দাবি তাদের ইস্তাহারে রাখে, আমাদের বিষয়টি ভাবে, আমরাও সেই দলের কথা ভাবতে পারি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement