প্রতীকী ছবি।
বায়োমেট্রিক হাজিরার যন্ত্র না বসানোয় খাতড়ার মহকুমা কৃষি দফতরের কর্মীদের বের করে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মহকুমা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন ও কৃষি দফতরের মধ্যে চাপানউতর শুরু হয়ে গিয়েছে।
খাতড়া মহকুমা কৃষি দফতরের অফিসের কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁরা যথাসময়ে অফিসে ঢুকে হাজিরা খাতায় সই করেন। তারপরেই মহকুমাশাসকের অফিসের তরফে তাঁদের বাইরে ডেকে নিয়ে গিয়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি দরজায় সিভিক ভলান্টিয়ারও মোতায়েন করা হয় বলে তাঁদের দাবি। এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় দুপুর দেড়টা নাগাদ তালা খুলে দেওয়া হয়। কর্মীদেরও ভিতরে ঢুকতে বলা হয়। চালু হয় কাজকর্ম। কিন্তু বিতর্ক থেমে থাকেনি।
ঘটনা হল, সরকারি কর্মীদের অফিসে আসা-যাওয়া নিয়ে কড়া মনোভাব নিয়েছে প্রশাসন। চলতি বছরের গোড়াতেই বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস নির্দেশ দেন, জেলা, মহকুমা ও ব্লক— প্রশাসনের তিনটি স্তরে সমস্ত প্রশাসনিক অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসাতে হবে। কর্মীদের সওয়া দশটার মধ্যে অফিসে ঢোকা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। জেলাশাসকের নির্দেশ মতো প্রায় সমস্ত সরকারি অফিসে ওই হাজিরা যন্ত্র বসে গিয়েছে।
যদিও জেলা কৃষি দফতর জেলাশাসকের এই নির্দেশে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, খাতড়া মহকুমা কৃষি দফতরকে একাধিকবার বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তা কার্যকর করা হয়নি।
এ দিন সন্ধ্যায় জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওই দফতরকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসাচ্ছে না। অথচ মহকুমাশাসকের অফিসের বাকি সমস্ত দফতরে ওই হাজিরা যন্ত্র চালু হয়ে গিয়েছে। এ দিন মহকুমাশাসকের তরফে তাদের বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর ব্যাপারে বলতে গেলে সমস্যা হয়। সাময়িক ভাবে তালা দেওয়া হলেও পরে খুলে দেওয়া হয়।’’
এ দিন বারবার চেষ্টা করেও মহকুমাশাসক (খাতড়া) রাজু মিশ্রকে ফোনে ধরা যায়নি।
খাতড়া মহকুমা কৃষি আধিকারিক গণেশ সিং সর্দারও বলেন, ‘‘এ দিন অফিসে ছিলাম না। কেন অফিসে তালা দেওয়া হয়েছিল, তা ভাল করে খোঁজ নিতে হবে।’’ তবে দরজায় তালা দেওয়ার ঘটনায় কৃষি দফতরের আধিকারিকদের একাংশ যে অসন্তুষ্ট তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তাঁরা।
কৃষি দফতরের কয়েকজন আধিকারিক দাবি করেন, ‘‘রাজ্য কৃষি দফতর থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর ব্যাপারে কোনও নির্দেশ আসেনি। তাই আমরা এখনই কিছু করছি না।’’
যদিও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের যুক্তি, ‘‘কর্মীদের নিয়ম মাফিক হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার প্রায় সব দফতর ওই যন্ত্র বসিয়েছে। তাহলে কৃষি দফতরের অসুবিধা কোথায়? এ জন্য আলাদা ভাবে কৃষি দফতরের নির্দেশ কেন লাগবে?’’