ট্যাবলোর সূচনা। পুরুলিয়া জেলাশাসকের অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।
‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে শৌচাগার তৈরি করা হলেও অনেকেই তা ব্যবহার করছেন না। শৌচকর্মের জন্য এখনও তাঁরা যান খোলা জায়গায়। এমনই খবর এসেছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে। এই অভ্যাস বদলের লক্ষ্যে প্রচারে এ বার ‘কন্যাশ্রী’ প্রাপক ও স্বনির্ভর দলের সদস্যদের সামিল করছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রচার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এখনও পর্যন্ত কম-বেশি পাঁচ লক্ষ পারিবারে শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেখা গিয়েছে, অনেকেই শৌচাগার ব্যবহার করেন না। খোলা জায়গায় শৌচকর্ম সারেন তাঁরা। এর ফলে, রোগ ছড়াচ্ছে। সে কারণেই এই প্রচার কর্মসূচি।’’
জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘এখনও জেলার বাসিন্দাদের একাংশ শৌচাগার ব্যবহার না করে মাঠে যান। এটা দীর্ঘদিনের অভ্যাস। অভ্যাসের বদল ঘটানোই লক্ষ্য।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, অতীতে স্কুলের বেহাল শৌচালয় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার উদ্যোগে ভূমিকা নিয়েছিল ছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে গড়ে ওঠা কন্যাশ্রী ক্লাব। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার কাজে সামিল করা হয়েছিল ‘ক্লাবের’ প্রধান ‘কন্যাশ্রী বড়দি’-কে। প্রকাশ্যে শোচকর্ম বন্ধে যে প্রচার কর্মসূচি চলবে, তাতে যোগ দেবেন কন্যাশ্রীরাও।
জেলাশাসক জানান, ‘আমার মেয়ে সব জানে’— এই স্লোগানকে সামনে রেখেই কন্যাশ্রী ক্লাবগুলি গড়ে তোলা হয়েছিল। তারা গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে শৌচাগার ব্যবহারের জন্য যে প্রচার চলবে, তাতে ছাত্রীদের সামিল করানো হবে। পাশাপাশি, সামিল করানো হবে স্বনির্ভর দলের সদস্যাদেরও।’’
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া জানান, শৌচাগার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বার্তা দিতে প্রতিটি মহকুমায় আগামী দেড় মাস ‘ট্যাবলো’ ঘুরবে। শুক্রবার সেই যাত্রা শুরু হবে। এ ছাড়া, এই দেড় মাস জুড়ে সব পঞ্চায়েত, সরকারি অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাটবাজারে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সচেতনতা গড়তে বিভিন্ন স্কুলে ‘বসে আঁকো প্রতিযোগিতা’ এবং সাফাই অভিযান ও পদযাত্রা হবে। লোকগানের মাধ্যমেও বার্তা দেওয়া হবে। গ্রাম সংসদ স্তরেও সচেতনতা প্রচার হবে। তিনি জানান, যে সমস্ত এলাকায় প্রকাশ্যে শৌচকর্মের অভ্যাস রয়েছে, সেখানে বাড়ি-বাড়ি প্রচার কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে।