অবশেষে ধান বিক্রির টাকা পাবেন ৪১৩ চাষি

প্রায় বছর খানেক দৌড় ঝাঁপের পরে অবশেষে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির টাকা পেতে চলছেন রাজনগর ও নানুর ব্লকের ৪১৩ জন চাষি। মঙ্গলবার সিউড়িতে এসে এ কথা জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০০:১৮
Share:

সভা। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে মন্ত্রী সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

প্রায় বছর খানেক দৌড় ঝাঁপের পরে অবশেষে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির টাকা পেতে চলছেন রাজনগর ও নানুর ব্লকের ৪১৩ জন চাষি। মঙ্গলবার সিউড়িতে এসে এ কথা জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Advertisement

মন্ত্রী জানান, চাষিদের বকেয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা ফেরত দেবে রাজ্য সরকারের অত্যাবশ্যকীয় পন্য নিগম। দিন পাঁচেকের মধ্যে মিগম টাকা দেবে জেলাশাসককে। জেলাশাসক চাষিদের সেই টাকা দেবেন। প্রসঙ্গত গত অর্থে বর্ষে ওই সব চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জোট সঙ্গী ছিল ‘আর্থিক সঙ্গতিহীন’ এক সমবায় সমিতি। আর অস্বিত্বহীন এক রাইসমিল। প্রশাসনিক নজরদারিতে মার্চ থেকে জুন চাষিদের কাছে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার বরাত দেওয়া হয়েছিল এদেরকেই। ফল যা হওয়ার হয়েছিল। বিক্রিত ধানের টাকাই পাননি নানুর ও রাজনগর ব্লকের চাষিরা। ধান বিক্রি স্বরূপ যে চেক সমবায় দিয়েছিল, তার সব কটিই বাউন্স করে গিয়েছিল।

জেলা খাদ্য ও সরবরাহ ও সমবায় দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চাষিদের কাছে থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় আগ্রহী নানুরের কুমিরা জয় মা কালী সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির আবেদন ক্রমেই একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয় গত মার্চে। আরও দুটি পক্ষ ছিল আতিফ অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট নামে দুবরাজপুরের হেতমপুরস্থিত একটি ধানকল মালিক (যিনি আদত বর্ধমানের বাসিন্দা) ও খাদ্য ও সরবরাহ দফতেরে অনুমোদিত সংস্থা ওয়েষ্টবেঙ্গল এসেনসিয়াল কমডিটি সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড সংক্ষেপে ডাব্লিউবিইসিএসসি জেলা পারচেজ অফিসার।

Advertisement

তিন দফায় মোট ১৫০০ মেট্রিক টন ধান কেনার বারাত দেওয়া হয়েছিল নানুরের ওই সমিতিকে। মোট দুটি ব্লক মিলিয়ে ৪৬৬ জন চাষি ধান বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু মুশকিল হল, যে সমবায় সমিতির আর্থিক সঙ্গতি ছিল না। এবং রাইসমিলার চালকলের যে ঠিকানা দিয়েছিল সেটিরও কোনও অস্বিত্ব পরে খুঁজে পায়নি প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ৫২ জন চাষি টাকা পেয়েছিলেন। কিন্ত দুটি ব্লকের ৪১৩ জন চাষি ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকারও বেশি বকেয়া। এর পর থেকেই প্রশাসনের সর্ব স্তরে বারবার দরবার করেছেন অসহায় চাষিরা। মন্ত্রীর ঘোষণায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলছেন চাষিরা।

কী পদক্ষেপ হবে চালকল মালিকের বিরুদ্ধে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই চালকল মালিক ঠাকানোর উদ্দেশ্যেই ধান কিনে সেটা বিক্রি করে চলে গিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এফআই আর হয়েছে। তদন্ত হবে।’’

এ বার সহায়ক মূল্যে ধান কেনার হাল হকিকত জেলায় কেমন সেটা খতিয়ে দেখতেই বিভাগীয় মন্ত্রী এ দিন বিকালে সিউড়ির ডিআরডিসি হলে জেলা প্রাশাসন, সংশ্লিষ্ট দফতর, রাইসমিলার, প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। ছিলেন দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি মনোজ অগ্রবাল, যুগ্ম সচিব শুভাশিস পালিত, মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠক সেরে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্য মাত্রা প্রায় পূরণ করে এই মূহুর্তে দ্বিতীয় স্থানে। এক নম্বরে মুর্শিদাবাদ। মার্চের শেষ তারিখ পর্যন্ত এই জেলার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২,১১,৯৭৮ মেট্রিকটন ধান কেনার কথা। ইতিমধ্যেই কেনা হয়েছে ১, ৮৩, ৭৪৩ মেট্রিকটন। ধান কেনার সিলিং তুলে দেওয়ার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement