রঘুনাথপুরে জয়চন্ডী পাহাড় পর্যটন মেলার উদ্বোধনের অনুষ্ঠান। ছবি : সঙ্গীত নাগ।
পাহাড় ঘিরে পর্যটনের বিকাশে ১৭ বছর আগে জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসবের সূচনা হয়েছিল প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার হাত ধরে। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার জয়চণ্ডী উৎসবের সূচনা হল তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে। সত্যজিৎ রায় নামাঙ্কিত মূল উৎসব মঞ্চে রাখা হয়েছিল প্রয়াত সাংসদের ছবি। তাতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অভ্যাগতেরা।
উৎসব কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘বাসুদেববাবুর হাত ধরেই উৎসবের সূচনা হয়। গত মাসে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। উৎসবের সূচনা লগ্নে বাসুদেববাবুকে স্মরণ করেছি আমরা।" উৎসব কমিটিতে আধিপত্য রয়েছে তৃণমূলের। সেই প্রেক্ষিতে উৎসব মঞ্চে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদকে স্মরণ করা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও এটিকে শিষ্টাচার বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্বত্ব।
জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসব প্রাঙ্গণ ও পর্যটনস্থলে যাওয়ার পাকা ও স্থায়ী রাস্তার দাবি করেছিলেন এলাকাবাসী। গত মার্চে জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশনের কাছ থেকে পর্যটনস্থল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছিল জেলা পরিষদ। অর্থ বরাদ্দের পরে কাজও শুরু হয়। তবে রাস্তা নির্মাণ এখনও হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, পাহাড়ে যাওয়ার পাকা রাস্তা না থাকায় পর্যটনের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। অতীতে উৎসব মঞ্চ থেকেই জয়চণ্ডী পাহাড়ে রোপওয়ে নির্মাণের দাবি উঠেছিল। তা এখনও পূরণ হয়নি।
পর্যটনস্থলে যাওয়ার পাকা রাস্তা দ্রুত তৈরি হবেই বলে আশ্বাস দেন সৌমেন। তিনি বলেন, ‘‘জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে রাস্তা নির্মাণে দেরি হচ্ছে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘জেলায় যে ট্যুরিজ়ম সার্কিট তৈরি হচ্ছে, তাতে রয়েছে জয়চণ্ডী পাহাড়। পাহাড় ঘিরে পর্যটনের বিকাশে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ জয়চণ্ডী পর্যটন উৎসবকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও উঠেছিল। এ প্রসঙ্গে সৌমেন বলেন, ‘‘উৎসব করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার সামনে পড়তে হয়। সরকারি স্বীকৃতি পেলে আরও বড় করে উৎসব করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি। এ বিষয়ে রাজ্য পর্যটন দফতরে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’ উৎসব মঞ্চে হাজির রাজ্য বীজ নিগমের অধিকর্তা শুভাশিস বটব্যাল বলেন, ‘‘জয়চণ্ডী পাহাড় ঘিরে পর্যটনের বিকাশের যে সমস্ত দাবি ও প্রস্তাব উঠেছে, তা নিয়ে রাজ্যের কাছে তদবির করব।’’
উৎসবের উদ্বোধনে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আদিত্যবিক্রম হিরানি। মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) তামিলওভিয়া এস, এসডিপিও (রঘুনাথপুর) অবিনাশ ভীমরাও যাধোয়ার, জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, উতসব কমিটির সম্পাদক তথা রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান, তৃণমূলের তরণী বাউরি প্রমুখ। উৎসব চলবে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত। পাঁচ দিনে মূল মঞ্চে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বলে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে।