প্রতীকী ছবি।
বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বে কোন রাস্তাগুলি চওড়া করা হবে, সে সিদ্ধান্ত জেলা পরিষদ নিলেও তৃতীয় পর্যায়ে রাস্তাগুলির নির্বাচনে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। ঠিক হয়েছে, ‘জিও ট্যাগিং’-এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি চিহ্নিত করা হবে। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’র তত্ত্বাবধানে এই কাজ চলছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়।
‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’ (পিএমজিএসএয়াই) প্রকল্পে জেলার গ্রামীণ রাস্তাগুলি পাকা রাস্তা করার কাজ শুরু হয় ২০০০-০১ অর্থবর্ষে। প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এক বাস্তুকার সনুপ মণ্ডল জানান, এক হাজার মানুষ বসবাস করেন, এমন মৌজাকে মূল রাস্তার সঙ্গে সংযুক্তির কাজ দিয়েই প্রকল্প শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে, পাঁচশো জনসংখ্যার মৌজা এবং তার পরে আড়াইশো জনসংখ্যার মৌজাকে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রধান রাস্তার সঙ্গে সংযুক্তির কাজ প্রকল্পের প্রথম পর্বে করা হয়েছিল।
২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষ পর্যন্ত জেলায় এই প্রকল্পের প্রথম পর্বের কাজ চলেছিল। সে সময়ে জেলা পরিষদ জেলায় ৪২০টি রাস্তা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেয়। তৈরি হয় ৪১৪টি রাস্তা। লক্ষ্যমাত্রার ২,২৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে ২,২৩০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়। তার পরে দ্বিতীয় পর্বে এলাকার গুরুত্বের নিরিখে ১৩টি ব্লকের ১৮টি রাস্তাকে চওড়া করা এবং সেই রাস্তাগুলিকে রাজ্য সড়ক বা জাতীয় সড়কের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কাজ রাখা হয়েছে।
এর সঙ্গে রয়েছে সংস্কারের কাজও। ২০০০-০১ অর্থবর্ষে কাজ শুরুর পরে, পরবর্তীতে যে রাস্তাগুলি তৈরি হয়, তাদের মধ্যে একাধিক রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও রাস্তা তৈরির পাঁচ বছর পরে সেটির হাল পর্যবেক্ষণ করে সংস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়। সম্প্রতি এমন ৭২টি রাস্তা সংস্কারের সুপারিশ জেলা পরিষদের তরফে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়।
জেলা পরিষদের জেলা বাস্তুকার কান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখনও পর্যন্ত জেলা পরিষদ ৮৬টি রাস্তা সংস্কার করেছে। আরও ৭০টি রাস্তা সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার সম্প্রতি ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এর পাশাপাশি, ‘বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা’ (বিজিএসওয়াই) প্রকল্পের আওতাভুক্ত নয়, এমন ১৮টি রাস্তা সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার আলাদা ভাবে ছ’কোটি টাকাবরাদ্দ করেছে।
প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে কোন রাস্তাগুলি চওড়া করা হবে, তা নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত বাস্তুকার ষষ্ঠীচরণ গঁরাই বলেন, ‘‘কোন রাস্তাগুলি তৃতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য নির্বাচিত হবে, তা ‘জিও ট্যাগিং’-এর মাধ্যমে ঠিক করা হবে। একটি রাস্তায় কত যানবাহন চলে, সেই রাস্তায় কোনও হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ বা বাজার রয়েছে কি না, বাসস্ট্যান্ড বা রেলওয়ে স্টেশনকে যুক্ত করছে কি না, এগুলি মাথায় রাখা হবে। রাস্তাগুলি যে ‘বিজিএসওয়াই’ প্রকল্পের আওতাভুক্ত হতে হবে তা নয়। তার বাইরে থাকা অন্য রাস্তাও হতে পারে।’’