ধৃত বাঙালি ব্যবসায়ী ভবানী মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব ছবি।
কোটি কোটি টাকা প্রতারণা ও ব্যবসায়িক কারবারে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ দায়ের হয় ঝাড়খণ্ডে। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামে ভিন্ রাজ্যের পুলিশ। কিন্তু মাস চারেক ধরে বাঙালি ব্যবসায়ীকে নাগালে পাননি তদন্তকারীরা। রবিবার প্রতারণায় সেই অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে বাঁকুড়া থেকে গ্রেফতার করল ঝাড়খণ্ডের পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অনেক দিন ধরেই ভবানী মুখোপাধ্যায় নামে পুরুলিয়ার ওই ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশানে নজর রাখা হচ্ছিল। সেই মতোই ফাঁদ পাতা হয়। নড়াচড়া দেখেই পিছু ধাওয়া করে বাঁকুড়া শহরের অদূরে ভবানীর গাড়ি আটকায় ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার চাস থানার পুলিশ। ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে রবিবার দুপুরে তাঁকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। সেখান থেকে ভবানীকে ট্রানজিট রিমান্ডে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যায় পুলিশ।
ঝাড়খণ্ডের পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবানীর একটি টিএমটি বার তৈরির কারখানা রয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বোকারোর প্রভাত কলোনির বাসিন্দা, ধ্রুব নারায়ণ নামে এক ব্যবসায়ী চাস থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে তিনি জানান, ভবানী বিভিন্ন সময়ে তাঁর কাছে নগদ কয়েক কোটি টাকা ঋণ নেন। শুধু তা-ই নয়, কারখানার জন্যেও কোটি কোটি টাকার কাঁচামাল ঋণ হিসাবে নিয়েছেন। বিনিময়ে ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীকে নির্দিষ্ট অঙ্কের শেয়ারও দেন ভবানী। ধ্রুবর দাবি, অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কারখানায় ঢুকতেই বাধা দেওয়া হয়। তাই, বাধ্য হয়েই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানায়, মোট ১৩ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ধ্রুব। এর পরেই তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু গত চার মাস ধরে ভবানীর খোঁজ মেলেনি। হঠাৎ রবিবার সকালে ভবানীর টাওয়ার লোকেশনে দেখে বোঝা যায়, তিনি পুরুলিয়া থেকে কলকাতার দিকে যাচ্ছেন। এর পরেই পিছু ধাওয়া করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারির পর অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ভবানী। তাঁকে আদালতে হাজির করানোর সময় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, জানি না। আজ পুরুলিয়া থেকে কলকাতা যাচ্ছিলাম। ওই সময় ঝাড়খণ্ডের পুলিশ আমায় গ্রেফতার করেছে। আমি প্রতি দিন তিন কোটি টাকার ব্যবসা করি। কোটি টাকা আমার কাছে বড় ব্যাপার নয়!’’