ঝালদা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
বাড়ি তৈরির কিস্তির টাকা পাইয়ে দিতে পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেন ঝালদার পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল।
সোমবার তিনি দাবি করেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে আগে এক বাসিন্দা হাউজ় ফর অল প্রকল্পে কিস্তির টাকা পাইয়ে দিতে তাঁর কাছে টাকা দাবি করেছিলেন। এ দিন ওই পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে আরও চার উপভোক্তা পুরপ্রধানের কাছে একই অভিযোগ করেছেন।
সুরেশ বলেন, ‘‘উপপুরপ্রধানকে মাথায় রেখে তিন পুরপ্রতিনিধিকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটি তদন্ত শেষে পুরসভায় রিপোর্ট জমা দেবে। অভিযোগের সত্যতা মিললে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
যদিও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি সোমনাথ কর্মকারের দাবি, অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ঝালদা শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জবা কান্দু ২০২৩ সালের জুন মাসে অভিযোগ করেন, আবাস যোজনায় তাঁর বকেয়া কিস্তির টাকা পাইয়ে দিতে ওই ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সোমনাথ কর্মকার ওরফে রঞ্জন তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নেন। পরে তাঁর দাবি মতো আরও ২০ হাজার টাকা মেটাতে না পারায় পরবর্তী কিস্তির টাকা আটকে দেন।
সে সময় সোমনাথ কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি ছিলেন। তখন পুরপ্রধান ছিলেন কংগ্রেস-নির্দল জোটের শীলা চট্টোপাধ্যায়। জবার অভিযোগ, তিনি ঝালদার মহকুমাশাসক এবং ঝালদার পুরপ্রধানের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
রবিবার জবার বাড়িতে গিয়ে সুরেশ দাবি করেন, তাঁর আটকে থাকা কিস্তির টাকা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ভাবে আর কাউকে টাকা না দেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
এ দিন সুরেশ দাবি করেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডের আরও চার জন বাড়ি প্রাপক ওই পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছেন। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
গত সেপ্টেম্বর মাসে শীলা, সোমনাথ-সহ কয়েকজন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তারপরেই সুরেশপন্থী তৃণমূলের আদি পুরপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়। যত দিন গিয়েছে, তৃণমূল নেতৃত্বের চেষ্টা সত্ত্বেও ফাটল বড় হয়েছে।
সম্প্রতি কংগ্রেসের সমর্থনে অনাস্থা ভোটে শীলাকে পুরপ্রধান পদ থেকে সরিয়ে পুরসভা দখল করেছেন সুরেশপন্থীরা। সেই প্রেক্ষিতে সোমনাথের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে শহরে।
এ দিকে অনেক দিন থমকে থাকার পরে হাউজ় ফর অল প্রকল্পে সম্প্রতি বকেয়া কিস্তির টাকা পুরসভা ছাড়তেই অভিযোগ আসতে শুরু করেছে।
তবে এ দিনও সোমনাথ দাবি করেছেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। তদন্ত হলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’