প্রতীকী ছবি
দলের কর্মিসভায় ডাক পেলেন না তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের প্রাক্তন খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জটিল মণ্ডল। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি যোগেরও অভিযোগ উঠেছে দলের মধ্যে থেকেই। জটিল অবশ্য বিজেপি যোগ-সহ কোনও অভিযোগই মানেননি।
শনিবার ময়ূরেশ্বরের ছামনা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটি বেসরকারি শিক্ষকশিক্ষণ কলেজে তৃণমূলের বুথ সভাপতিদের সভা ছিল। সেই সভায় জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ অসিত মাল, পর্যবেক্ষক ত্রিদীপ ভট্টাচার্য, দলের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, বিধায়ক অভিজিৎ রায়, ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্র, যুব সভাপতি চন্দ্রনীল ঘোষ প্রমুখ। জটিল বা তাঁর অনুগামীদের দেখা মেলেনি। জটিল নিজে বলেন, ‘‘ওই মিটিংয়ে আমাকে ডাকা হয়নি। তাই যাইনি।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, এলাকার নেতৃত্ব নিয়ে ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্র ওরফে আশিসের সঙ্গে জটিলের বিরোধ দীর্ঘদিনের। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তা প্রকাশ্যে আসে। ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে অভিজিৎ রায়কে প্রার্থী করা হলে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ হন জটিল। নিজের এলাকা ষাটপলশায় অভিজিৎ রায়ের প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের দাবিতে অনুগামীদের দিয়ে মিছিল আয়োজনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। আশিস অনুগামীদের সেই মিছিলে দেখা যায়নি। উল্টে তাঁরা অভিজিৎবাবুর হয়ে প্রচার শুরু করেন। তাতে দু’পক্ষের বিরোধ বাড়ে। পরে অবশ্য জটিলকে প্রচারে নামতে দেখা গেলেও বিরোধ থামেনি বলেই গুঞ্জন রয়েছে দলে।
দল সূত্রে খবর, এর পরে মল্লারপুরের এক সভায় দলে ভাঙন ধরানোর জন্য জটিলকে দায়ী করে সরব হন আশিস অনুগামীরা। উভয়পক্ষের বচসা থামাতে হাত জোড় করে অনুরোধ করতে হয় জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এমনকি বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে আশিস-সহ পঞ্চায়েত সমিতির ২১ জন সদস্যের মধ্যে ১৮ জন জটিলের বিরুদ্ধে একক সিদ্ধান্তে
এককভাবে পঞ্চায়েত সমিতি চালানোর অভিযোগ তুলে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
তৃণমূল সূত্রের খরব, পরিস্থিতির সামাল দিতে জটিলকে সরকারি ভাবে ৬ মাসের ছুটি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা মানেননি বলে অভিযোগ। বালিঘাট, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে আর্থিক দুর্নীতি, ভিলেজ পুলিশ এবং শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষন সহ নানা অভিযোগও উঠেছে জটিলের বিরুদ্ধে। এ সবের জেরেই কর্মিসভায় ডাক মেলেনি বলে দলের একাংশের অভিমত।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবারের সভায় উপস্থিত কর্মীদের একাংশ জটিলের বিরুদ্ধে তাঁদের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগে সরব হন। জটিল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। ব্লক সভাপতির কথায়, ‘‘জটিল ষাটপলশা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকা দেখার দায়িত্ব রয়েছে জেলা কমিটির। তাই তাঁকে ডাকা না ডাকার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’’
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘জটিলকে কেন মিটিংয়ে ডাকা হল না খোঁজ নিয়ে দেখছি। বিজেপি যোগের অভিযোগটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। দলীয় স্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’