লোহার পাতে মোড়া হয়েছে গেট। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবনের সামনের পূর্বিতা গেট এ বার মুড়ে দেওয়া হল লোহার পাত দিয়ে। বড় গেটের পাশে যে ছোট লোহার গেটটি ছিল, সেটিকেও লোহার পাতে মুড়ে ফেলা হয়েছে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত কয়েক মাসে একাধিক বিষয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাংলোর সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন পড়ুয়ারা। সাম্প্রতিক ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের সদস্যরাও। এর ফলে দফায় দফায় গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে উপাচার্যকে। গোটা ঘটনায় নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথাও বারে বারে উল্লেখ করেছেন তিনি। গত ২২ এপ্রিল রাজ্যপালও উপাচার্যের বাড়ির সামনে লাগাতার বিক্ষোভের জেরে তাঁর নিরাপত্তাহীনতার কথা টুইট করেছিলেন। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয় ওই দিনই রাতে। সেদিন পাঠভবনের মৃত পড়ুয়ার দেহ নিয়ে পড়ুয়া ও পরিজনদের একাংশ উপাচার্যের বাড়িতে প্রবেশ করতে চান এবং কয়েকজন উত্তেজিত পড়ুয়া ও পরিজন পূর্বিতা গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে যান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে দরজা আবার লাগানো হলেও নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
এই পরিস্থিতিতেই দরজা দুটি লোহার পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা যাচ্ছে। এর ফলে বিক্ষোভ আটকানো যাবে না বা গৃহবন্দি দশাও এড়ানো যাবে না। কিন্তু এতে অন্তত দরজার ভিতরে নিরাপত্তাকর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভকারীদের অগোচর থাকবে এবং দরজা বন্ধ রাখা আরও সহজ হবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
এই পদক্ষেপ ‘উপাচার্যের ভয়ের বহিঃপ্রকাশ’ বলে দাবি করছেন বিশ্বভারতীর ছাত্র নেতা সোমনাথ সৌ। তাঁর কথায়, “আমাদের কোনও দাবির ক্ষেত্রেই মুখোমুখি হওয়ার প্রয়োজন মনে করতেন না উপাচার্য। এ বার সেই ভয়েই নিজেকে বিশ্বভারতী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখার পাকাপাকি বন্দোবস্ত করে নিলেন তিনি। তবে এতে আন্দোলন কমবে না, বরং আরও বাড়বে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাক্তন পড়ুয়ার দাবি, “'উপাচার্য নিজেকে লোহার পাতের আড়ালে লুকিয়ে রাখতে চাইছেন। কিন্তু, আন্দোলনের ঢেউ সব কিছুকেই ভাসিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। এখন সেই দিনেরই অপেক্ষা।”