প্রতীকী ছবি।
বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জেলা পুলিশের চার সশস্ত্র (আর্মড) কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হল রাতারাতি। রবিবার রাতে শুধু তাঁদের সরিয়ে নেওয়াই নয়, কেন নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হয়ে তাঁরা অন্য দায়িত্ব পালন করছেন, সেই ব্যাপারে তদন্ত করে দেখতে চার পুলিশ কর্মীকেই পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে অফিসিয়াল বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পৌষমেলার মাঠ ঘিরে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে যখন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রাক্তনী, পড়ুয়া, আশ্রমিক ও বোলপুরবাসীর ক্ষোভ প্রতিবাদ অব্যাহত, ঠিক সেই সময়ে জেলা পুলিশ এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরের গার্ড হিসেবে চার পুলিশকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরে আমাদের নজরে আসে কর্তৃপক্ষ তাঁদের অন্য কাজে নিযুক্ত করছেন। সেটা থানাকে না জানিয়েই। এটা নিয়ম বিরুদ্ধ।’’ পুলিশ সুপারের সংযোজন, ‘‘এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিষয়টি দেখছেন। যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ওই পুলিশ কর্মীদের পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাচার্যের কার্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে ওই চার জনকে নিয়োগ করা হলেও, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে উপাচার্য তাঁদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী হিসেবেই ব্যবহার করছিলেন, এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগ, উপাচার্য নিহত জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের মহম্মদবাজারের বাড়িতে যাওয়ার সময় হোক বা আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হতে পারে এমন জায়গায় পুলিশকর্মীদের পাঠানো হয়েছে। রবিবার সকালে থানাগামী রাস্তা ব্যরিকেড করে পৌষমেলার মাঠকে পাঁচিল ঘিরে ফেলার কাজের দেখভাল করার সময় দুই পুলিশকর্মী উপাচার্যের সঙ্গী ছিলেন, এটা দেখার পরই পুলিশের তরফে তাঁদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রবিবার যখন আইনশৃঙ্খলজনিত সমস্যা হয়েছিল, সেখানে উপচার্য ওঁদের দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। নিয়ম হল, আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হয়ে থাকলে অন্য কাজে নিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের সেখানে নিয়ে যেতে হলে সেটা স্থানীয় থানাকে জানিয়েই নিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে এবং আগেও একাধিকবার এটা করা হয়নি।’’
এ দিন সংবাদমাধ্যমকে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, বুধবার বিশ্বভারতী সহ সব পক্ষকে নিয়ে বোলপুর এসডিও অফিসে কথা বলবেন। তিনি বলেন, ‘‘অচলাবস্থা কাটাতেই এই উদ্যোগ।’