ছাতনায় বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার ও বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের অসন্তোষ কিছুতে কমছে না।টাকার বিনিময়ে চাকরিতে নিয়োগ ও দল পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে ফের প্রকাশ্যে রাস্তায় তাঁদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন দলীয় কর্মীদেরই একাংশ। মন্ত্রী সুভাষের অবশ্য দাবি, তৃণমূলের মদতে ভিত্তিহীন অভিযোগে এ সব হচ্ছে।
রবিবার ছাতনার বারবাঁকড়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, সুভাষের ছবিতে কালো কালি লেপে দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতে বিজেপির পতাকা ছিল। ছাতনার বেশ কিছু পুরনো বিজেপি কর্মীকে ওই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছাতনা ২ পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য অশোক বিদ ও দলের প্রাক্তন জেলা নেতা শ্যামসুন্দর মণ্ডল অভিযোগ তোলেন, টাকার বিনিময়ে গৌরীপুর কুষ্ঠ হাসপাতাল, রেলের কাটজুড়িডাঙা হল্ট স্টেশনে অযোগ্য লোকজনদের চাকরিতে নিয়োগ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় মন্ত্রী সুভাষ ও সুনীলরুদ্র যুক্ত বলে দাবি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি দল পরিচালনার কাজেও সাংসদের কাছের লোকেদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এর ফলে বহু যোগ্য বিজেপি কর্মী বঞ্চিত হচ্ছেন।
শ্যামসুন্দর বলেন, “এটা কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়। আমরা সবাই বিজেপি করি, দলকে ভালবাসি। কিন্তু সাংসদ ও জেলা সভাপতি যা করছেন, তা দলের পক্ষে ভাল নয়। টাকার বিনিময়ে তাঁরা অযোগ্য লোকজনকে চাকরিতে নিয়োগ করছেন।” এলাকার পুরনো বিজেপি নেতা
অশোক বিদ বলেন, “নিজের কাছের লোক ছাড়া আর কাউকে দলে গুরুত্বই দিচ্ছেন না সাংসদ। কেউ বিরোধিতা করতে গেলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।”
কয়েক সপ্তাহ আগে বাঁকুড়া শহরে নতুনগঞ্জে বিজেপির জেলা কার্যালয়েই সুভাষকে আটকে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীদের একাংশ। সুনীলরুদ্রকেও বিক্ষোভকারীরা হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর শালতোড়া ও সিমলাপালেও বিজেপি কর্মীদের একাংশ সাংসদ ও বিজেপির জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখান। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে অস্বস্তি দানা বেঁধেছে বিজেপির অন্দরে।
দলের জেলা কমিটির সদস্য তথা ছাতনার বিজেপি নেতা স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “দলেরই পুরনো কার্যকর্তারা এ দিন প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় আলোচনার মাধ্যমেই মেটানো উচিত।”
এই ঘটনায় মন্ত্রী সুভাষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দলবিরোধী কাজ ও তৃণমূলের সঙ্গে সংযোগ রেখে চলার জন্য জেলা নেতৃত্ব রাজ্যের কাছে কয়েকজনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এই পরিস্থিতিতে ‘ঘোলা জলে মাছ ধরতে’ পিছন থেকে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের মদত দিয়ে বিক্ষোভ করাচ্ছে তৃণমূল।’’