কমবে ‘হুকিং’-দুর্ঘটনা, দাবি
AB cable

জেলা জুড়ে ‘এবি কেব্‌ল’ 

জেলায় ইতিমধ্যে বিশেষ ধরনের এই ‘এরিয়াল ব্রাঞ্চ কেব্‌ল’ বা ‘এবি কেব্‌ল’ লাগানোর কাজও শুরু হয়েছে।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় 

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিদ্যুৎ চুরি রুখতে ও দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ পরিবাহী তারে বদল আনতে চলেছে জেলা বিদ্যুৎ দফতর। জেলায় ইতিমধ্যে বিশেষ ধরনের এই ‘এরিয়াল ব্রাঞ্চ কেব্‌ল’ বা ‘এবি কেব্‌ল’ লাগানোর কাজও শুরু হয়েছে। দফতর জানাচ্ছে, আগামী দু’বছরের মধ্যে গোটা জেলায় বিদ্যুৎ পরিবাহী তার বদলে ফেলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যে প্রায় ৪০ হাজার কিলোমিটার তার বদলে ইতিমধ্যেই এবি কেব্‌ল লাগানো হয়ে গিয়েছে। এখনও অনেকখানি কাজ বাকি। ধাপে ধাপে আমরা কাজটা করছি। মূলত দুর্ঘটনা ও অন্যায় ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া রুখতেই আমরা এই পদক্ষেপ করছি। এতে সামগ্রিক ভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবার মানও বাড়বে।’’

দফতর সূত্রে খবর, বর্তমানে অ্যালুমিনিয়ামের তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। নতুন ধরনের এই তারে অ্যালুমিনিয়ামের উপরে রবার জাতীয় বস্তুর আস্তরণ লাগানো থাকবে। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, এই তার থেকে সহজে ‘হুক’ করে বিদ্যুৎ চুরি করা যাবে না। পাশাপাশি, ঝুলে থাকা তার থেকে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও নেই। বেশ শক্তপোক্ত হওয়ায় সহজে ছিঁড়েও যায় না।

Advertisement

জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ পরিবাহী তার থেকে ‘হুক’ করে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা প্রায়ই সামনে আসে। যদিও চুরির পরিমাণ কত, তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই জেলা বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের কাছে।

তাঁরা জানান, জেলায় প্রায় ৭ লক্ষ ৪০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। প্রতি ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এর ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ অপচয় হয়। আর এই অপচয় হওয়া বিদ্যুতের বেশিরভাগই অবৈধ ভাবে ‘হুক’ করে টেনে নেওয়া বলে দফতরের আধিকারিকদের দাবি। যার জন্য বিদ্যুৎ দফতরকে ফি বছর মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি বহন করতে হয়।

জেলা বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, জেলা জুড়ে প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ পরিবাহী তার রয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে কোতুলপুর ও ইন্দাস ব্লকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার এলাকায় ‘এবি কেব্‌ল’ লাগানো হয়েছে। এতে ওই দু’টি ব্লকে ‘হুকিং’-এর ঘটনা কিছুটা কমেছে, দাবি দফতরের আধিকারিকদের।

মাস দু’য়েক আগে বিষ্ণুপুরের রাধানগর ও ইন্দাসে দু’টি নতুন সাবস্টেশন তৈরি ও সেখান থেকে ‘এবি কেব্‌ল’-এর সংযোগ দিতে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, ৬০ কোটি টাকা শুধু ‘এবি কেব্‌ল’ লাগানোর কাজেই ব্যবহার করা হবে। ওই দু’টি নতুন সাবস্টেশন থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার জুড়ে তার লাগানো হবে। পাশাপাশি, কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামজ্যোতি যোজনা’ প্রকল্পেও প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার জুড়ে এবি কেব্‌ল লাগানো হবে।

জেলা বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওন্যাল ম্যানেজার দেবাশিস মণ্ডলের দাবি, “শুধু ‘হুকিং’ আটাকানোই নয়, ‘এবি কেব্‌ল’-এ সামগ্রিক ভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবার মানও বাড়বে। আগামী দু’বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে গোটা গোটা জেলায় এই তার লাগানোর লক্ষ্য রয়েছে।”

বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন, ‘অ্যাবেকা’-র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক স্বপন নাগ বলেন, “বিদ্যুৎ চুরিকে সমর্থন করি না। তবে জেলায় বিদ্যুৎ পরিষেবায় এখনও অনেক খামতি রয়েছে। সেগুলি দ্রুত মেটাতে দফতর উদ্যোগী হোক।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement