—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অনুমোদনহীন দোকান উচ্ছেদে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে ফিরতে হয়েছিল রেলকে। সম্প্রতি আদ্রার ওই ঘটনার পরে রেলের জমিতে থাকা ওই দোকানগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে জেনারেটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হল। ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন প্রায় ছ’শো দোকানদার। তাঁদের অনেকের দাবি, দিনে কোনও মতে দোকান খোলা গেলেও রাতে আলোর অভাবে দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। রেলের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, ওই দোকানগুলিকে উচ্ছেদ করতেই এই পথ নিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
ঘটনা হল, আদ্রায় চলা ব্যবসার একটা বড় অংশ হচ্ছে রেলের জমিতে থাকা ছোট-বড় অননুমোদিত নানা দোকান। সূত্রের খবর, রেলশহরে বৈধ দোকানের তুলনায় রেলের জমিতে থাকা অনুমোদনহীন দোকানের সংখ্যা অনেকটা বেশি। স্টেশন লাগোয়া এলাকা-সহ গোটা রেলশহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে দোকানগুলি। খাবারের দোকান থেকে শুরু করে জামাকাপড়ের ছোট দোকান, চা-পাঁউরুটি-কেকের দোকান, জুতোর দোকান, ফলের দোকান-সহ নানা ধরনের দোকান রয়েছে প্রচুর ব্যবসায়ীর।
স্টেশনের সার্কুলেটিং এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ-সহ আরও কিছু কাজের জন্য বর্তমানে জমি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে রেলের। জায়গা খালি করতে প্রথমে তিনশোর মতো দোকানকে সরে যেতে নোটিস দেওয়া হয়। সেই সময়ে তার বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছিল তৃণমূল। উচ্ছেদও স্থগিত রাখে রেল। সম্প্রতি স্টেশন লাগোয়া এলাকায় গোটা কুড়ি দোকানকে সরিয়ে দিতে রেল অভিযানে নামলে সক্রিয় বিরোধিতা করে তৃণমূল। উচ্ছেদ বন্ধ করে মাঝপথে ফিরতে হয় রেলকে।
এর পরে আরপিএফের বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে রেলের জমিতে থাকা আটটি জেনারেটর থেকে দোকানে দোকানে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন রেলের আধিকারিকেরা। দোকানদারদের একাংশ জানান, এক বেলা দোকান করে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। রেলের জমি থেকে সরে যেতে রাজি আছেন জানিয়ে তাঁদের দাবি, “দীর্ঘসময় ধরে রেলের জমিতে ব্যবসা করছি। তার বিনিময়ে দৈনিক আমাদের কাছে ভাড়া নেয় রেল। জায়গা ছাড়লে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রেলকেই করতে হবে।”
একই মত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূলের আদ্রা শহর সভাপতি রাজা চৌবে, স্থানীয় আড়রা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তুফান রাইরা বলেন, “রেলের জমি থেকে ওই দোকানদারদের সরাতেই জেনারেটর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাইছি পুনর্বাসন দিয়ে ওই ব্যবসায়ীদের সরানো হোক।” আদ্রার ডিআরএমের সঙ্গে দেখা করে দাবি জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল।
তবে ডিআরএম সুমিত নারুলা জানান, রেলের জমিতে থাকা অননুমোদিত দোকানগুলির পুনর্বাসনের দায়িত্ব তাদের নয়। তিনি বলেন, “দীর্ঘসময় ধরে ওই ব্যবসায়ীরা রেলের জমিতে ব্যবসা করছেন। রেল বাধা দেয়নি। স্টেশনের সার্কুলেটিং এলাকায় উন্নয়নের কাজের জন্য এখন রেলের জমির প্রয়োজন। তাই ওই দোকানদারদের সরে যেতে বলা হয়েছে। এই কাজে যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁরা উন্নয়নের বিরোধী।” যদিও তৃণমূল শহর সভাপতির দাবি, “আমরা সকলকে নিয়ে উন্নয়নের পক্ষে। পুনর্বাসন না দিলে ওই ব্যবসায়ীরা কোথায় যাবেন, তা রেলকেই ভাবতে হবে।”