বাড়িতে অনুব্রত। নিজস্ব চিত্র
নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের কলেজছাত্রী বোন শকুন্তলার পড়াশোনার ব্যাপারে তাঁরা সব সময় পাশে থাকবেন বলে বৃহস্পতিবার আশ্বাস দিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বার চাইলে পার্টি শকুন্তলার পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব নেবে বলে জানালেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার সকালে রাজেশের বাড়ি গিয়ে এমনই ঘোষণা করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার থেকেই রাজেশের বাড়িতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য স্তরের নেতারা এসেছেন। এ দিন সকালেই নিহত জওয়ানের বাড়িতে চলে আসেন অনুব্রত, জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এবং কৃষিমন্ত্রী আশিসবাবু। সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ-সহ অন্যেরা। শকুন্তলার হাতে রাজ্য সরকারের তরফে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী।
অনুব্রত রাজেশের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান। সেই সময় রাজেশের জেঠতুতো ভাই অভিজিৎ ওরাং অনুব্রতকে জানান, রাজেশই ছিলেন ওই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তা শুনেই অনুব্রত বলেন, ‘‘ওর (শকুন্তলা) পড়াশোনা এবং বিয়ের খরচ আমরা পার্টি থেকে দেব। এ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জনকে চাকরি এবং পাঁচ
লক্ষ টাকা দিয়েছেন।’’ শকুন্তলা এবং অভিজিৎকে অনুব্রত নিজের ফোন নম্বর দিয়ে কোনও সমস্যা হলে সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার কথাও বলেন। তৃণমূলের মহম্মদবাজার ব্লক কমিটির পক্ষ থেকেও আলাদা ভাবে ১ লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয় ওই পরিবারকে।
রাজেশকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এ দিন গ্রামে এসেছিলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীও। পরবর্তী সময়ে উপস্থিত হন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী, জেলার একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ। তাঁরা রাজেশের মরদেহ সমাধিস্থ হওয়ার পরে বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা মা-বোনের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান। ওই
প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা জানিয়েছেন, নিহত সব জওয়ানের পরিবারের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারকে নেওয়ার দাবি তাঁরা জানিয়েছেন। সিপিএমের পক্ষ থেকেও রাজেশের পরিবারের সদস্যদের হাতে এক লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।
আব্দুল মান্নান সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘দেশের অখণ্ডতা বজায় রাখতে যদি যুদ্ধ করতে হয়, সে ক্ষেত্রেও আমরা সকলেই সঙ্গবদ্ধ। আমাদের জওয়ানদের আত্মবলিদান যেন ব্যর্থ না হয়।’’ সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সেনাও যুদ্ধ চায় না। আলাপ-আলোচনা এবং শান্তির পরিবেশ সারা বিশ্ব চায়। সেটা কী ভাবে হবে সরকার ঠিক করবে।’’