৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় অতিক্রান্ত, এখনও চলছে আয়কর দফতরের তল্লাশি। — নিজস্ব চিত্র।
৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় অতিক্রান্ত। তৃতীয় দিনেও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের পরিবারের মালিকানাধীন রাইস মিলে ম্যারাথন তল্লাশি জারি আয়কর দফতরের। লাগাতার ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার সকালেও রাইস মিলে হাজির হন বিধায়ক তন্ময়। তলব করা হয় তাঁর হিসাবরক্ষক অরূপ সামন্তকেও। সূত্রের খবর দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাতেই আয়কর প্রতিনিধিদের জন্য রাইস মিলে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল বিছানা, বালিশ। মনে করা হচ্ছে, রাতে সেগুলিই ব্যবহার করছেন আয়কর দফতরের প্রতিনিধিরা। তাঁদের জন্য খাবারও আসছে বাইরে থেকে।
বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির সেই মঞ্চ থেকেই বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময়কে খাদ্য দফতরের দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত বাকিবুরের সঙ্গে তুলনা টেনে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘বাকিবুরের মতোই এই রাইস মিলকে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতি করেছেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ।’’ এর পরেই তন্ময়ের রাইস মিলে আয়কর হানা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি চাপানউতর। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই চালকলের ব্যবসা তন্ময়ের বাবার আমলের। তাই আয়কর দফতর যত চেষ্টাই করুক, আদপে তা টিকবে না।’’
পেশায় ব্যবসায়ী তন্ময় ২০১৫ সালে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভার কাউন্সিলর হন। ২০২০ সালের মে মাসে বিষ্ণুপুর পুরসভার নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হলে তাঁকে প্রশাসকমণ্ডলীতে আনা হয়। পাশাপাশি, ওই বছরই তন্ময়কে বিষ্ণুপুর শহরের যুব তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বও দেওয়া হয়। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিষ্ণুপুর বিধানসভায় তিনি তৃণমূলের টিকিটের অন্যতম দাবিদার ছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে টিকিট না দিয়ে বিষ্ণুপুর বিধানসভায় প্রার্থী করে অর্চিতা বিদকে। এর পরই বিজেপিতে যোগ দেন তন্ময়। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে ওই কেন্দ্র থেকেই জয় পান তন্ময়। কিন্তু সে বছরের অগস্টে তিনি আবার তৃণমূলে ফেরেন। নভেম্বরেই তাঁর রাইস মিলে আয়কর দফতরের ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান।