Sonajhuri forest

সোনাঝুরির জঙ্গল ঘিরে খুঁটি পুঁতছে বন দফতর, রুজি হারানোর আশঙ্কায় হাটের ১৭০০ ব্যবসায়ী!

ফিতে ফেলে সোনাঝুরির নানা প্রান্তে মাপজোক শুরু হতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্য দিকে, পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, এই পদক্ষেপ করা হলে তা জঙ্গলের পক্ষেই মঙ্গলজনক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৪
Share:

সোনাঝুরির জঙ্গলে চলছে মাপজোক। —নিজস্ব চিত্র।

জঙ্গল থেকে মাটি চুরি, টোটোর বাড়বাড়ন্ত, গাছপালা নষ্ট—শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাট ঘিরে এমন নানা অভিযোগ অনেক দিনের। এই প্রেক্ষিতে হাটের বেশকিছু এলাকা ঘিরে মাপজোক শুরু করল বন দফতর। মঙ্গলবার ফিতে ফেলে সোনাঝুরির নানা প্রান্তে মাপজোক শুরু হতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্য দিকে, পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, এই পদক্ষেপ করা হলে তা জঙ্গলের পক্ষেই মঙ্গলজনক।

Advertisement

শান্তিনিকেতনের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে সোনাঝুরির খোয়াই হাট। সারা বছর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে এখানে। বছর ২০ বছর আগে বন দফতরের এই জায়গায় হাট চালু হয় স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা এবং হস্তশিল্পীদের উদ্যোগে। এখন শুধু আর শুক্র এবং রবিবার নয়, প্রায় প্রতি দিন হাটে কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা হয়। কিন্তু পর্যটন কেন্দ্রের জন্য ওই এলাকার জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন পরিবেশপ্রেমীরা। বিশেষত, বন দফতরের জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা হোটেল ও রিসর্টের জন্য বন তথা হাটের সৌন্দর্য ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বার জঙ্গল বাঁচাতেই খুঁটি দিয়ে জমি চিহ্নিতকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করল বন দফতর।

ঠিক কী পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন? বীরভূমের জেলার বন দফতরের আধিকারিক দেবাশিস মহিমা প্রসাদ প্রধান বলেন, ‘‘সোনাঝুরি হাটকে নিজেদের সীমানায় আয়ত্তের মধ্যে আনতে চলেছে বন দফতর। আমাদের অধীনে থাকা জমি চিহ্নিতকরণ ছাড়াও শীঘ্রই মোট ১২১ কিলোমিটার জঙ্গলে পিলার দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তা ছাড়া সীমানা সুরক্ষিত করতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।’’ তিনি জানান, জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ। দেবাশিস বলেন, ‘‘জঙ্গলের কোনও ক্ষতিকে কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’’

Advertisement

প্রশাসনের এই পদক্ষেপে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ব্যবসায়ীরা। সোনাঝুরির জঙ্গলের একাংশে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন স্থানীয় হস্তশিল্পী, কুটিরশিল্পী এবং আদিবাসী শিল্পীরা। হাটকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার মহিলারা স্বনির্ভর হয়েছেন। আয়ের নতুন উৎস পেয়েছেন। এখন বন দফতর জায়গাটি ঘিরে ফেললে হাটের আর অস্তিত্ব থাকবে কি না, এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘বন দফতর জঙ্গলের সীমানা দিতেই পারে। তবে রুজিরুটির জন্য হাটে বসা প্রায় ১,৭০০ শিল্পী এবং ব্যবসায়ীর পেটে লাথি না পড়লেই হল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement