টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গ্রেফতার হন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র ।
১৯৯০ থেকে ২০২০। ৩০ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিষ্ণুপুর পুরসভার পুরপ্রধানের জায়গায় সব থেকে বেশি বার দেখা গেছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে। শ্যামাপ্রসাদ দীর্ঘ সময় ধরে কখনও কংগ্রেসে থেকেছেন আবার কখনও দল বদলে তৃণমূলে এসেছেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কিছু দিন যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরেও।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে দল তাঁকে টিকিট নাও দিতে পারে আশঙ্কায় পদ্ম শিবিরে যোগ দেন শ্যামাপ্রসাদ। ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে তাঁর বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গ্রেফতার হন তিনি। ফের আসন্ন পুরসভা নির্বাচন। বিষ্ণুপুরের পুর নির্বাচনের ময়দান এ বার শ্যামাবিহীন।
তবে এখনও বিষ্ণুপুর পুরসভার পুরপ্রধানদের তালিকার বোর্ডে শ্যামাপ্রসাদের নামই বারবার চোখে পড়ে। ১৯৮৫ সালে প্রথম কংগ্রেসের টিকিটে জিতে কাউন্সিলার হন তরুণ আইনজীবী শ্যামাপ্রসাদ। পরে ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জিতে সরাসরি পুরপ্রধান হন তিনি। এর পর শ্যামাপ্রসাদ মোট ছ’বার পুরপ্রধানের চেয়ারে বসেন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিধায়ক ও মন্ত্রী হন তিনি। বিষ্ণুপুর পুরসভায় তাঁর নিজের দলের লোক এমনকি কাউন্সিলাররাও বিশেষ পাত্তা পেতেন না।
বিষ্ণুপুরের সিপিএম নেতা হিমাংশু ঘোষ বলেন, ‘‘দলের প্রার্থী পছন্দ থেকে শুরু করে সরকারি প্রকল্পের টাকা খরচ— সবটা নিজে করতেন শ্যামাপ্রসাদ। কেউ কিছু জানতে চাইলেও জানাতেন না। তিনি রাজনীতির ময়দানে থাকলে তাঁর পোষা গুন্ডাদের ভয়ে বিরোধীরা বহু আসনে নির্ভয়ে প্রার্থীই দিতে পারত না।’’
এই প্রসঙ্গে, কংগ্রেসের নেতা দেবু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের মাটি কংগ্রেসের মাটি। সেই মাটি শ্যামাপ্রসাদকে জায়গা করে দিয়েছিল। আজ তিনি পুরভোটের ময়দানে নেই, এটা আমাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা করে দিচ্ছে এমনটাও নয়।’’
বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক তথা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অর্চিতা বিদের দাবি, ‘‘ব্যাক্তি বিশেষে ভোট হয়না। মানুষ আমাদের দল ও প্রতীককে ভালবাসে। এই প্রতীক হাতে নিয়ে যিনি বেরোবেন, মানুষ তাঁকেই সমর্থন করবেন।’’
তবে ‘‘শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বিষ্ণুপুরের রাজনীতিতে একটি মহীরুহ’’, বলেই মন্তব্য করেছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।