আজ, সোমবার থেকে খুলে যাচ্ছে হোটেল। তার আগে চলছে সাফাই। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের জেরে যে সব ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম পর্যটন শিল্প। দু’মাসেরও বেশি সময় পরে সরকারি নির্দেশ মতো আজ, সোমবার থেকে খুলছে সরকারি পর্যটন অতিথি নিবাস-সহ বেসরকারি হোটেল, রিসর্টগুলি। রবিবার সেগুলিতে তারই প্রস্তুতি দেখা গেল। তবে হোটেল-রিসর্ট খুললেও পর্যটকেরা আদৌ আসবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান মালিকেরা।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের প্রায় কয়েক হাজার পর্যটক শান্তিনিকেতনে আসেন। শান্তিনিকেতন-বোলপুরের অর্থনীতির একটা বড় অংশ হোটেল ও রিসর্ট ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু লকডাউনের কারণে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের। সে ক্ষতি এখন কীভাবে পূরণ হবে তা ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই।
বোলপুর-শান্তিনিকেতনে দু’টি সরকারি পর্যটন নিবাস-সহ ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৫০টি বেশি হোটেল ও রিসর্ট রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে বোলপুরের রাঙাবিতান, ট্যুরিস্ট লজ-সহ বেসরকারি হোটেল ও রিসর্টগুলি খোলা হচ্ছে। সোমবার থেকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন বুকিংও শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। রবিবার বোলপুর-শান্তিনিকেতনের একাধিক হোটেল ও রিসর্টে গিয়ে দেখা গেল সব জায়গাতেই জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে।
সরকারি অতিথি নিবাস-সহ বাকি হোটেল, রিসর্টগুলিতেও যাতে কোনওভাবে সংক্রমণ না ছড়ায় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যটক আসলে সামাজিক দূরত্ব বিধি যেমন মানতে বলা হবে, তেমনই কোনও পর্যটক আসামাত্রই তাঁর থার্মাল স্ক্রিনিং থেকে শুরু করে হোটেলে ঢোকার আগে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খাবার টেবিলে বসতে দেওয়া, প্রতিদিনের বিছানার চাদর পাল্টে দেওয়া, সবাইরা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, প্রভৃতি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
এরপরেও চিন্তা দূর হচ্ছে না হোটেল মালিকদের। কারণ এখনও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। বাইরে থেকে পর্যটকদের শান্তিনিকেতন-বোলপুর ঘুরতে আসা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তাই সোমবার থেকে হোটেল খুললেও পর্যটক হবে কি না, হোটেলের ব্যয় খরচা উঠবে কি না তা নিয়েই এখন চিন্তিত হোটেল ব্যবসায়ীরা। বোলপুর শান্তিনিকেতন হোটেল মালিক সমিতির সম্পাদক প্রসেনজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মতো বোলপুর-শান্তিনিকেতনে সোমবার থেকে সমস্ত হোটেল, রিসর্ট খোলা হবে। কিন্তু পর্যটক না হলে হোটেল খরচা কীভাবে উঠবে? এই পরিস্থিতিতে যদি পর্যটক না হয় তাহলে কিছুদিন দেখার পর আমরা সকলে মিলে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’